আতঙ্কে বিশ্ব বাজার! মন্দার আশঙ্কায় কি কাঁপছে ওয়াল স্ট্রিট?

মার্কিন শেয়ার বাজারে মন্দার আশঙ্কা: বাংলাদেশের জন্য এর প্রভাব

নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত এক নতুন প্রতিবেদনে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজার, ওয়াল স্ট্রিট-এ আবারও মন্দা দেখা দিতে পারে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতির উপর বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, যা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।

শেয়ার বাজারের মন্দা আসলে কি? সোজা কথায়, যখন কোনো প্রধান সূচক, যেমন স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস ৫০০ (এস অ্যান্ড পি ৫০০), যা আমেরিকার ৫০০টি বৃহৎ কোম্পানির শেয়ারের গড় মূল্য প্রকাশ করে, অথবা ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ (Dow Jones Industrial Average), যা ৩০টি প্রধান কোম্পানির শেয়ারের গড় মূল্য দেখায়, তাদের দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়।

যদি কোনো সূচকের দাম তার আগের সর্বোচ্চ স্তর থেকে ২০ শতাংশ বা তার বেশি কমে যায়, তবে সেই অবস্থাকে ‘মন্দা’ হিসেবে ধরা হয়।

বর্তমানে, এস অ্যান্ড পি ৫০০ তার আগের সর্বোচ্চ স্তর থেকে প্রায় ১৭.৬ শতাংশ নিচে অবস্থান করছে। এর মূল কারণ হল, বিশ্ব বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা।

প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমদানি শুল্কের ঘোষণার ফলে এই আশঙ্কা আরও বেড়েছে। তিনি বিভিন্ন দেশ থেকে আসা পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করেন, যা বিশ্ব অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

এই শুল্কের কারণে অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে সমস্যা অনুভব করছে।

আগেও, ২০২০ সালে শেয়ার বাজারে দ্রুত পতন দেখা গিয়েছিল, যা ছিল খুবই সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য। সেই সময় এস অ্যান্ড পি ৫০০ সূচক এক মাসের মধ্যে ৩৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে গিয়েছিল।

যদিও সাধারণত, মন্দা কাটিয়ে উঠতে সময় লাগে। ঐতিহাসিক তথ্য বলছে, একটি মন্দা শুরু হওয়ার পর তার সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছাতে গড়ে ১৩ মাস এবং সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে প্রায় ২৭ মাস সময় লাগে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে, এস অ্যান্ড পি ৫০০-এর গড় পতন হয়েছে প্রায় ৩৩ শতাংশ।

তাহলে, এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের কী করা উচিত? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নাও হতে পারে।

কারণ, শেয়ার বাজার ওঠা-নামা করতে পারে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারের এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য এবং আর্থিক সম্পর্ক রয়েছে।

যদি মার্কিন অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দেয়, তবে বিশ্বজুড়ে তার প্রভাব পড়বে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও অনুভূত হতে পারে।

এর ফলে, রপ্তানি আয় কমে যাওয়া, প্রবাসী আয় কমে যাওয়া, এমনকি বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দিতে পারে।

অতএব, বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদ এবং নীতিনির্ধারকদের জন্য এই পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনগুলো কিভাবে বাংলাদেশের উপর প্রভাব ফেলছে, তা বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস (Associated Press)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *