আতঙ্কে কাঁপছে ওয়াল স্ট্রিট! বড় ধাক্কা টেক-শেয়ারে, ফের কিu ধস?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে আবারও মন্দাভাব দেখা যাচ্ছে, যেখানে প্রযুক্তি খাতের বড় কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দর উল্লেখযোগ্য হারে কমছে। মঙ্গলবার দিনের শুরুতে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ১ শতাংশ কমে যায়।

এছাড়া, ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ ০.৬ শতাংশ এবং নাসডাক কম্পোজিট ১.৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

শেয়ার বাজারের এই অস্থিরতার কারণ হিসেবে বিভিন্ন বিষয়কে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে প্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলো।

উদাহরণস্বরূপ, টেসলার শেয়ারের দর ৪.৬ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে, যার প্রধান কারণ হিসেবে টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্কের কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্তকে দায়ী করা হচ্ছে।

এছাড়া, বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে টেসলার প্রতিযোগী কোম্পানিগুলোও তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে, যা টেসলার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

গুগলের মালিকানা প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটও তাদের শেয়ারের দর ২.৫ শতাংশ হারিয়েছে।

এর কারণ হিসেবে জানা যায়, কোম্পানিটি ৩২ বিলিয়ন ডলারে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান উইজ-কে কেনার ঘোষণা দিয়েছে।

যদিও এই পদক্ষেপ তাদের ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবসাকে আরও শক্তিশালী করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে বাজারের উপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

শেয়ার বাজারের এই দরপতনের পেছনে আরও কিছু কারণ রয়েছে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সঙ্গে জড়িত কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

এনভিডিয়া ২ শতাংশ এবং সুপার মাইক্রো কম্পিউটার ৩.৯ শতাংশ দর হারিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা কিছুটা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।

ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ এবং অন্যান্য নীতি ঘোষণার কারণে মার্কিন অর্থনীতিতে মন্দা আসার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, যার প্রভাব পড়ছে শেয়ার বাজারে।

এই পরিস্থিতিতে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক-এর আগামী বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সবাই।

ধারণা করা হচ্ছে, ব্যাংকটি সুদের হার অপরিবর্তিত রাখতে পারে।

তবে, বাজারের নজর থাকবে ফেডারেল রিজার্ভের কর্মকর্তাদের পূর্বাভাসে, যেখানে সুদের হার, মূল্যস্ফীতি এবং অর্থনীতির ভবিষ্যৎ গতিপথ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, ফেডারেল রিজার্ভ যদি অর্থনীতির দুর্বলতা নিয়ে উদ্বেগের পরিবর্তে মূল্যস্ফীতিকে বেশি গুরুত্ব দেয়, তাহলে তা বাজারের জন্য আরও খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

এদিকে, বৈশ্বিক শেয়ার বাজারের চিত্র কিছুটা ভিন্ন।

ইউরোপ ও এশিয়ার অনেক দেশের শেয়ার সূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল।

জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ১.২ শতাংশ বেড়েছে।

ইন্দোনেশিয়ার শেয়ার বাজারেও অস্থিরতা দেখা দেয়, তবে পরে তা কিছুটা স্থিতিশীল হয়।

শেয়ার বাজারের এই অস্থিরতা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি সতর্কবার্তা।

এর প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও পড়তে পারে।

তাই, বাজারের গতিবিধির দিকে নজর রাখা এবং সে অনুযায়ী বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *