১১ জনকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়লেন: ওয়ালমার্টের সেই বীরের সাহসিকতা!

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের একটি ওয়ালমার্টে ছুরি হামলার ঘটনায় ১১ জন আহত হওয়ার পর এক সাহসী ব্যক্তির তৎপরতায় রক্ষা পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজন গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার, ট্র্যাভার্স সিটি শহরে। জানা যায়, ৪২ বছর বয়সী ব্র্যাডফোর্ড গিলে নামের এক ব্যক্তি একটি দোকানে ঢুকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করতে শুরু করেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ৩৯ বছর বয়সী ম্যাথিউ কোলাকোউস্কি নামে এক ব্যক্তি। তিনি শপিং করছিলেন তার মেয়ের সাথে। হঠাৎ করে শোরগোল শুনে তিনি বুঝতে পারেন কিছু একটা গন্ডগোল হয়েছে।

কোলাকোউস্কি জানান, তিনি যখন দেখেন এক ব্যক্তি ছুরি হাতে দৌড়াচ্ছে, তখন তিনি তার মেয়েকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলেন। এরপর হামলাকারীকে প্রতিহত করতে এগিয়ে যান তিনি। তার কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না। কোলাকোউস্কি একটি শপিং কার্ট (গাড়ি) হাতে নিয়ে হামলাকারীর দিকে ছুটে যান এবং তাকে থামানোর চেষ্টা করেন।

কোলাকোউস্কির সাহসী ভূমিকার কারণে হামলাকারীকে দ্রুত কাবু করা সম্ভব হয়। পরে অন্যান্য লোকজনও এগিয়ে আসে এবং হামলাকারীকে ধরে ফেলে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী ব্র্যাডফোর্ড গিলের মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা ছিল এবং এর আগেও তার বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযোগ উঠেছিল। ২০০১ সাল থেকে মিশিগানের পেটস্কি এলাকায় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের রেকর্ড রয়েছে। ২০১৭ সালে তিনি একটি গোরস্থানের স্মৃতিচিহ্ন ভাঙচুরের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন, তবে মানসিক অসুস্থতার কারণে তাকে নির্দোষ ঘোষণা করা হয়।

আহতদের মধ্যে ২৯ থেকে ৮৪ বছর বয়সী নারী ও পুরুষ রয়েছেন। আহতদের মধ্যে ওয়ালমার্টের একজন কর্মচারীও ছিলেন। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, আহতদের সবাই এখন আশঙ্কামুক্ত। এই ঘটনার পর ব্র্যাডফোর্ড গিলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও হত্যার চেষ্টার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।

কোলাকোউস্কি, যিনি নিজেও একজন সেনা-সদস্য ছিলেন, তার এই সাহসিকতার জন্য স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বীরত্বের প্রশংসা করছেন। তার শ্যালক ক্রিস ও’ব্রায়েন জানিয়েছেন, ম্যাথিউয়ের এই সাহসী পদক্ষেপের কারণে আরও অনেক মানুষের জীবন রক্ষা পেয়েছে।

ঘটনার পর পেটস্কি পাবলিক সেফটি ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে জানায়, তারা গিলের মানসিক স্বাস্থ্য বিবেচনা করে তাকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতের অনুমতি চেয়েছিল, কিন্তু তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা বাড়ানো এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করা জরুরি।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *