ওয়ালথামস্টো এফসি: একটি ফুটবল জার্সির গল্প, যা গড়ে তোলে একতা
ফুটবল খেলা শুধু একটি খেলা নয়, এটি একটি আবেগ, যা মানুষকে একতাবদ্ধ করে। মাঠের সবুজ ঘাস থেকে শুরু করে গ্যালারির উন্মাদনা—ফুটবল যেন এক ভিন্ন জগৎ।
আর এই খেলার সাথে যদি মিশে যায় শিল্প আর সমাজের কথা, তাহলে সেই গল্প আরও গভীর হয়। সম্প্রতি, ইংল্যান্ডের অষ্টম স্তরের ক্লাব, ওয়ালথামস্টো এফসি, তেমনই একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
তাদের ফুটবল জার্সির ডিজাইন শুধু একটি পোশাক নয়, বরং এটি একটি কমিউনিটিকে একত্রিত করার এক দারুণ প্রচেষ্টা।
২০২৩ সালে, ওয়ালথামস্টো এফসি, বিখ্যাত শিল্পী উইলিয়াম মরিসের সম্মানে তাদের নতুন জার্সি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এই কাজে তারা হাত মেলায় উইলিয়াম মরিস গ্যালারি, উড স্ট্রিট ওয়ালস এবং অ্যাডমিরাল স্পোর্টসওয়্যার-এর সাথে।
উইলিয়াম মরিস ছিলেন একজন ভিক্টোরিয়ান কবি, টেক্সটাইল ডিজাইনার এবং সমাজ সংস্কারক।
তিনি বিশ্বাস করতেন, শিল্প সবার জন্য, কিছু মানুষের জন্য নয়। মরিসের এই ভাবনাকে সামনে রেখে, ওয়ালথামস্টো এফসি-র কিট ডিজাইন করা হয়, যা সমাজের সকল স্তরের মানুষের কাছে শিল্পকে পৌঁছে দেওয়ার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।
জার্সিটির ডিজাইন শুধু আকর্ষণীয় নয়, এর পেছনে রয়েছে গভীর দর্শন।
ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই জার্সির মাধ্যমে তারা স্থানীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চেয়েছেন।
জার্সির নকশায় উইলিয়াম মরিসের ডিজাইন এবং স্থানীয় শিল্পকলার একটি মিশ্রণ ঘটানো হয়েছে।
এই জার্সির উন্মোচন অনুষ্ঠানে ওয়ালথামস্টোর এমপি স্টেলা ক্রেসি সহ স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন, যা প্রমাণ করে এই উদ্যোগ কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
এই জার্সি তৈরির পেছনের গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি তথ্যচিত্র, যার নাম ‘মেড ইন ওয়ালথামস্টো’।
তথ্যচিত্রটি নির্মাণ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা জ্যাইমাকা আওয়ুয়ুংবো।
এই ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে জার্সির ডিজাইন থেকে শুরু করে এর পেছনের ভাবনা, স্থানীয় মানুষের আবেগ এবং এই প্রকল্পের সামাজিক প্রভাব।
তথ্যচিত্রে ওয়ালথামস্টো এফসি-র কর্মকর্তাদের পাশাপাশি উইলিয়াম মরিস গ্যালারির পরিচালক হ্যাড্রিয়ান গ্যারার্ডের সাক্ষাৎকারও রয়েছে।
ফুটবল খেলার প্রতি ভালোবাসা এবং শিল্পের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ—এই দুইয়ের মেলবন্ধন ঘটিয়ে ওয়ালথামস্টো এফসি প্রমাণ করেছে, খেলাধুলা পারে মানুষকে একত্রিত করতে, সমাজকে নতুন পথে চালিত করতে।
তাদের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য।
বাংলাদেশেও ফুটবল একটি জনপ্রিয় খেলা, এবং এখানেও এমন উদাহরণ তৈরি হতে পারে, যেখানে খেলাধুলা এবং সমাজের ভালো কাজের মধ্যে একটি যোগসূত্র স্থাপন করা যায়।
তথ্য সূত্র: The Guardian