যুদ্ধ কি নিছকই একটি ধারণা, নাকি বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি? সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘ওয়ারফেয়ার’ সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছে, যা ২০০৬ সালের ইরাক যুদ্ধের একটি মর্মান্তিক অভিযানের বাস্তব ঘটনার ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে।
ছবিটির প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে ইরাকের রামাদি প্রদেশে, যেখানে মার্কিন নৌবাহিনীর বিশেষ বাহিনী ‘সিল’-এর সদস্যরা এক গুরুত্বপূর্ণ মিশনে অংশ নিয়েছিলেন।
ছবিটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন অবসরপ্রাপ্ত নেভি সিল সদস্য রে মেন্ডোজা এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা অ্যালেক্স গারল্যান্ড। ‘ওয়ারফেয়ার’-এর গল্পে উঠে এসেছে সেই সময়ের সৈন্যদের দুঃসাহসিকতা, আত্মত্যাগ এবং যুদ্ধের ভয়াবহতা।
ছবিতে অভিনয় করেছেন ডি’ফারাহ ওন-আ-তাই, উইল পোল্টার, জোসেফ কুইন, কসমো জার্ভিস, কিট কনর, টেলর জন স্মিথ, ও চার্লস মেলটনসহ আরও অনেকে।
বাস্তব ঘটনার প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলার জন্য নির্মাতারা ছবিটিতে অনেক বেশি মনোযোগ দিয়েছেন। রে মেন্ডোজা নিজে এই মিশনে অংশ নিয়েছিলেন এবং সাহসিকতার জন্য ‘সিলভার স্টার মেডেল’ লাভ করেন।
যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং সৈন্যদের মানসিক আঘাতের বিষয়টি অনুভব করার জন্য, পরিচালকগণ বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে ছবিটির চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন। এমনকি ছবিটির শুটিংয়ের সময়ও বাস্তবসম্মত পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে।
এই ছবির মূল অনুপ্রেরণা ছিলেন মেন্ডোজার এক বন্ধু, যিনি সেই মিশনে গুরুতর আহত হয়েছিলেন।
মারাত্মক আঘাতের কারণে তিনি স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেন এবং বাকশক্তিও লোপ পায়। বর্তমানে তিনি হুইলচেয়ারে বসে একটি টেক্সট-টু-স্পীচ প্রোগ্রামের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন।
মেন্ডোজা চেয়েছেন, এই ছবির মাধ্যমে তাঁর বন্ধু সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কিছুটা হলেও উপলব্ধি করতে পারেন।
ছবিতে অভিনয় করা অভিনেতারা তাদের চরিত্র ফুটিয়ে তোলার জন্য কঠোর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এমনকি, তারা সবাই মিলে তাদের মধ্যেকার বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে শরীরে ট্যাটুও করিয়েছেন।
যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিকে অত্যন্ত বাস্তবসম্মতভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য নির্মাতারা দীর্ঘ সময় ধরে দৃশ্য ধারণ করেছেন এবং বিস্ফোরক দৃশ্যের ক্ষেত্রে কম্পিউটার গ্রাফিক্সের পরিবর্তে বাস্তবসম্মত কৌশল অবলম্বন করেছেন।
দর্শকদের মধ্যে যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং সৈন্যদের মানসিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্য শব্দ এবং ক্যামেরার কাজেও বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে সিনেমা হলে ‘ওয়ারফেয়ার’ প্রদর্শিত হচ্ছে। যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং সৈন্যদের আত্মত্যাগের গল্প জানতে, ছবিটি হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
তথ্য সূত্র: পিপল