বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী এবং বিনিয়োগ গুরু ওয়ারেন বাফেট, যিনি বার্কশায়ার হ্যাথওয়ের প্রধান হিসেবে পরিচিত, আগামী বছর অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। ৯৪ বছর বয়সী এই কিংবদন্তি বিনিয়োগকারী সম্ভবত ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ এই পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন।
বাফেটের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে একটি দীর্ঘ এবং প্রভাবশালী অধ্যায়ের সমাপ্তি হতে চলেছে, যা বিশ্ব অর্থনীতি এবং বিনিয়োগের জগতে গভীর প্রভাব ফেলবে।
বার্কশায়ার হ্যাথওয়ে, যা বর্তমানে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলারের একটি বিশাল ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য, বাফেটের নেতৃত্বে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। তাঁর দূরদর্শী বিনিয়োগ কৌশল এবং ব্যবসায়িক প্রজ্ঞা বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীদের কাছে তাঁকে এক শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে।
বাফেটের অবসরের ঘোষণার পর তাঁর স্থলাভিষিক্ত হিসেবে গ্রেগ অ্যাবেলের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। অ্যাবেল বর্তমানে কোম্পানির ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তিনিই বাফেটের উত্তরসূরি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
ওয়ারেন বাফেট শুধু একজন সফল বিনিয়োগকারীই নন, তিনি একজন মহান সমাজসেবকও বটে। তিনি তাঁর বিপুল পরিমাণ সম্পদের ৯৯.৫ শতাংশ জনহিতকর কাজে ব্যয় করার ঘোষণা দিয়েছেন।
ফোর্বস ম্যাগাজিনের হিসাব অনুযায়ী, বাফেটের বর্তমান সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৬৫.৩ বিলিয়ন ডলার। এই বিশাল পরিমাণ অর্থ দান করার মাধ্যমে তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এবং অন্যদেরও জনকল্যাণমূলক কাজে উৎসাহিত করেছেন।
বাফেটের এই অবসরের ঘোষণার পাশাপাশি, বিশ্ব বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তিনি সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির সমালোচনা করে বলেছেন, এই ধরনের নীতি বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।
বাফেটের মতে, বাণিজ্য যুদ্ধ একটি বড় ভুল এবং এর ফলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাঁর এই মন্তব্য বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে।
বার্কশায়ার হ্যাথওয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তাদের বার্ষিক পরিচালন মুনাফা বেড়েছে। তবে ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কারণে কোম্পানির ব্যবসা এবং শেয়ারহোল্ডারদের মুনাফার ওপর কী প্রভাব পড়বে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
ওয়ারেন বাফেটের এই বিদায় নিশ্চিতভাবে বিনিয়োগের জগতে একটি শূন্যতা তৈরি করবে। তাঁর নেতৃত্ব, দূরদর্শিতা এবং ব্যবসায়িক প্রজ্ঞা সবসময় বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান