যুদ্ধ নয়, বাণিজ্যের পথে! বাফেটের বিস্ফোরক মন্তব্য

ওয়ারেন বাফেট, বিশ্বের অন্যতম খ্যাতিমান বিনিয়োগকারী, সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতি নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি মনে করেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের নীতি ‘বাণিজ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের’ শামিল, যা মোটেও সমর্থনযোগ্য নয়।

বাফেটের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে মিত্রদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ভারসাম্য নষ্ট করে।

বার্কশায়ার হ্যাথওয়ের বার্ষিক শেয়ারহোল্ডার সম্মেলনে বাফেট এই মন্তব্য করেন, যেখানে হাজার হাজার বিনিয়োগকারী এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

বাফেট তার বক্তব্যে বলেন, বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক হওয়া উচিত পারস্পরিক সুবিধার ভিত্তিতে। এর ফলে প্রতিটি দেশই তাদের সেরা পণ্য ও পরিষেবা দিয়ে উপকৃত হতে পারবে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাণিজ্য ক্ষেত্রে পারস্পরিক সমঝোতা ও সহযোগিতা খুবই জরুরি।

বাফেটের এই মন্তব্যের কারণ হলো, ট্রাম্প প্রশাসনের সময়ে বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। বাফেটের মতে, এর ফলস্বরূপ বিশ্বের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বাফেট মনে করেন, একটি দেশের উচিত অন্য দেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বজায় রাখা এবং পারস্পরিক সুবিধার কথা বিবেচনা করা।

শেয়ারহোল্ডারদের প্রশ্ন-উত্তর পর্বে বাফেটের কাছে বাণিজ্যনীতি বিষয়ক প্রশ্নগুলো প্রধান্য পায়।

এছাড়া, বিনিয়োগকারীরা জানতে চান বার্কশায়ার হ্যাথওয়ের হাতে থাকা বিশাল পরিমাণ নগদ অর্থের (প্রায় ৩৪৭.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৭ লাখ কোটি টাকার সমান) কারণ কী?

বাফেট জানান, বর্তমানে আকর্ষণীয় বিনিয়োগের সুযোগ কম থাকায় তিনি এই বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতে রেখেছেন। তিনি মনে করেন, ভবিষ্যতে ভালো বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হবে, যখন এই নগদ অর্থ কাজে লাগানো যাবে।

বাফেটের শেয়ারহোল্ডার সম্মেলনে যোগ দিতে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন সাধারণ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে সেলিব্রেটি এবং বিভিন্ন দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

প্রতি বছর প্রায় ৪০,০০০ মানুষ এই সম্মেলনে অংশ নেন। এবারের সম্মেলনে হিলারি ক্লিনটনও উপস্থিত ছিলেন।

বাফেটের এই মন্তব্য বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, কারণ বিশ্ব অর্থনীতির এই গুরুত্বপূর্ণ দিকটি আমাদের বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ওপর প্রভাব ফেলে।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে শুল্ক এবং বাণিজ্য বিষয়ক নীতিগুলো আমাদের দেশের অর্থনীতিকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। বাফেটের মতামত এক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য।

তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *