মার্কিন অর্থনীতিতে ট্রাম্পের বিপদ! ফের মন্দার আশঙ্কা ওয়ারেনের

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতিমালার কারণে আবারও অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন দেশটির সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ওয়ারেন ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক সংকটকালে যেমন সতর্ক করেছিলেন, এবারও তেমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবর সিএনএন।

ওয়ারেনের মতে, ট্রাম্পের শুল্ক বৃদ্ধি, কর হ্রাস এবং নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার নীতি—এই সবই মিলে একটি ‘বিষাক্ত মিশ্রণ’ তৈরি করছে, যা সামান্য ধাক্কাতেই ২০০৮ সালের মতো সংকট ডেকে আনতে পারে।

তিনি মনে করেন, ট্রাম্পের এই নীতিগুলোর কারণে একদিকে যেমন পণ্যের দাম বাড়ছে, তেমনি ব্যবসায়ীরা নতুন বিনিয়োগ করা থেকে বিরত থাকছেন এবং ঋণের পরিমাণ বাড়ছে।

একইসঙ্গে, নীতিনির্ধারকরা সংকটকালীন নিয়মকানুন শিথিল করার ফলে ভোক্তাদের ঋণ আরও বাড়ছে।

ওয়ারেন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ট্রাম্পের বিশাল ব্যয় পরিকল্পনা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।

যদিও ট্রাম্প এবং তার উপদেষ্টারা ওয়ারেনের এই যুক্তিতর্ককে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা বলছেন, ট্রাম্পের সময়ে মার্কিন অর্থনীতি শক্তিশালী ছিল এবং শেয়ার বাজারও ঊর্ধ্বমুখী ছিল।

তবে, ওয়ারেন তার উদ্বেগের কারণগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরতে চান।

সিনেটর ওয়ারেন মনে করেন, ট্রাম্পের নীতিমালার কারণে অর্থনীতিতে যে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, তার একটি সুস্পষ্ট বিকল্প প্রয়োজন।

তিনি এক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আগের অর্থনৈতিক এজেন্ডার সঙ্গে মিল খুঁজে পান, যেখানে আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং শিশু পরিচর্যার মতো খাতে বিনিয়োগের প্রস্তাব ছিল এবং যা কর্পোরেট করের মাধ্যমে অর্থায়িত হওয়ার কথা ছিল।

ওয়ারেন বলেন, “আমরা ওয়াল স্ট্রিট ব্যাংকগুলোতে বিনিয়োগ করেছি।

এখন সময় এসেছে আমেরিকান পরিবারগুলোতে বিনিয়োগ করার।” তিনি উল্লেখ করেন, বাইডেন এবং ডেমোক্র্যাটদের অনেক প্রস্তাব কংগ্রেসে পাস না হওয়ার কারণ হলো, প্রস্তাবগুলোর কাঠামো সেগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছিল।

ওয়ারেন মনে করেন, বর্তমান বিতর্কে পরিবর্তন আনা দরকার।

তিনি মনে করেন, গত দুই দশক ধরে ধনী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো প্রায়ই একটি অসম অর্থনীতির কথা বলে এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির দুরবস্থার কথা উল্লেখ করে ভোটারদের আকৃষ্ট করে।

ওয়ারেন শুল্কনীতির বিষয়ে সতর্ক করে বলেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে।

তিনি মনে করেন, শুল্কের কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে, যা ভোক্তাদের জন্য ক্ষতিকর হবে।

যদিও এই মুহূর্তে এর সরাসরি প্রভাব দেখা যাচ্ছে না, তবে ব্যবসায়িক, উৎপাদন ও ভোক্তা জরিপগুলো আসন্ন মাসগুলোতে দাম বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ওয়ারেন মনে করেন, ট্রাম্প তার ভোটারদের জন্য কাজ করছেন বলে দাবি করলেও বাস্তব চিত্র তার কথার সঙ্গে মেলে না।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *