ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ডের সৈন্যদের মোতায়েন নিয়ে বাড়ছে বিতর্ক।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ডের সৈন্যদের মোতায়েন নিয়ে বিতর্ক বাড়ছে। সৈন্যদের কাজ এবং তাদের দীর্ঘ সময় ধরে এখানে থাকার কারণে তাদের মধ্যে বাড়ছে হতাশা। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে, কেউ সৈন্যদের স্বাগত জানালেও অনেকে তাদের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে গত মাসে প্রায় ২,২০০ জনের বেশি ন্যাশনাল গার্ড সদস্যকে ওয়াশিংটন ডিসিতে পাঠানো হয়। এর মধ্যে প্রায় ১,৩০০ জন সদস্য অন্যান্য রাজ্য থেকে এসেছেন। সাধারণত, ন্যাশনাল গার্ডের কাজ হলো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা জরুরি অবস্থার সময় সহায়তা করা। কিন্তু এখানে তাদের কাজ বেশ ভিন্ন ধরনের। তাদের উপর পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে টহল দেওয়া, আবর্জনা পরিষ্কার করা, পাতা ঝাড়ানো এবং ঘাস লাগানো সহ বিভিন্ন “সৌন্দর্যবর্ধন” প্রকল্পের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সৈন্যদের অনেকে তাদের পরিবারের থেকে দূরে আছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলছেন যে তাদের মূল কাজ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই। অনেকেই তাদের বেসামরিক চাকরি এবং পরিবার ছেড়ে এসেছেন। তাদের মতে, এই ধরনের কাজ তাদের জন্য হতাশাজনক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সেনা সদস্য জানান, “আমরা হতাশ হয়ে পড়ছি।
এই মিশনের জন্য প্রতিদিন প্রায় ১ মিলিয়ন ডলার খরচ হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে সৈন্যদের জন্য খাবার, লন্ড্রি এবং অস্থায়ী আবাসনের খরচ। এছাড়াও, সৈন্যদের আবাসনের জন্য ভার্জিনিয়ার শহরতলীতে হোটেল ভাড়া করা হয়েছে।
ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা বলছেন যে তারা বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হচ্ছেন। কেউ তাদের ছবি তুলছেন এবং তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন, আবার কেউ তাদের দিকে বিরূপ দৃষ্টিতে তাকাচ্ছেন।
তবে, সরকার বলছে যে সৈন্যদের উপস্থিতি শহরের নিরাপত্তা বাড়াতে সহায়তা করছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের পর থেকে গাড়ী ছিনতাইয়ের ঘটনা ৩৭ শতাংশ, ডাকাতি ৫০ শতাংশ এবং সহিংস অপরাধ ২৩ শতাংশ কমেছে। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন যে, এই পরিসংখ্যানের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
ন্যাশনাল গার্ডের এই মোতায়েন কত দিন চলবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। কর্মকর্তাদের মতে, সৈন্যদের সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য তাদের মেয়াদ সম্ভবত ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। তবে, এই মিশন কত দিন চলবে, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের কাজ ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের মনোবল ভেঙে দিতে পারে। তাদের মতে, ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের জরুরি অবস্থার মোকাবিলা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেখানে তাদের এই ধরনের কাজ করানো হলে তারা হতাশ হতে পারেন।
একজন সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী বলেন, “আমি মনে করি, যদি তাদের মিশনের বিস্তারিত জানানো হতো, তাহলে তাদের মনোবল বাড়তো।
তথ্য সূত্র: সিএনএন