বর্ষাকালে বা গ্রীষ্মের ছুটিতে, বাংলাদেশের নদী, পুকুর, সমুদ্র অথবা সুইমিং পুলে সাঁতার কাটার মজাই আলাদা। তবে আনন্দের সঙ্গে দরকার সতর্কতা।
সাঁতার জানা থাকুক বা না থাকুক, পানিতে নামার আগে কিছু জরুরি বিষয় মনে রাখা উচিত। একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তির পরামর্শ অনুযায়ী, পানিতে সুরক্ষার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস সঙ্গে রাখা ভালো।
প্রথমেই আসা যাক লাইফ জ্যাকেটের কথায়। সাঁতার কাটার সময় লাইফ জ্যাকেট পরা খুবই জরুরি। বিশেষ করে যারা সাঁতার কাটে না, তাদের জন্য এটা জীবন রক্ষাকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম।
বাজারে বিভিন্ন ধরনের লাইফ জ্যাকেট পাওয়া যায়, যা সহজে পানিতে ভাসতে সাহায্য করে। নিশ্চিত করুন, লাইফ জ্যাকেটটি যেন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মান অনুযায়ী তৈরি করা হয়।
পোশাকের রংও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। পানিতে সহজে দেখা যায় এমন উজ্জ্বল রঙের পোশাক, যেমন— কমলা, হলুদ বা গাঢ় সবুজ রঙের পোশাক নির্বাচন করা উচিত। কারণ, কোনো কারণে যদি সাহায্য প্রয়োজন হয়, তাহলে উজ্জ্বল রঙের পোশাক উদ্ধারকারীদের দ্রুত খুঁজে পেতে সাহায্য করে।
পায়ের সুরক্ষার জন্য পানিতে হাঁটার সময় অ্যান্টি-স্লিপ স্যান্ডেল বা জলরোধী জুতা ব্যবহার করা ভালো। নদীর পাথুরে বা পিচ্ছিল স্থানে হাঁটার সময় এগুলো পা পিছলে যাওয়া থেকে রক্ষা করে এবং আঘাতের সম্ভাবনা কমায়।
ত্বকের সুরক্ষায় সানস্ক্রিন অপরিহার্য। তীব্র রোদ থেকে ত্বককে বাঁচাতে, এসপিএফ (SPF) ৩০ বা তার বেশি-যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। সাঁতার কাটার অন্তত ২০ মিনিট আগে সানস্ক্রিন লাগান এবং প্রতি দুই ঘণ্টা পর পর তা পুনরায় ব্যবহার করুন।
এছাড়াও, পোড়া বা আঘাতের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য কিছু জরুরি ঔষধ সঙ্গে রাখা দরকার। যেমন—পোড়া স্থানে লাগানোর জন্য অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম এবং ব্যথানাশক ঔষধ।
চোখের সুরক্ষাও জরুরি। সাঁতার কাটার সময় চোখে যেন পানি বা অন্য কোনো জীবাণু না লাগে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সাঁতার কাটার জন্য ভালো মানের সাঁতারের চশমা ব্যবহার করুন।
এছাড়াও, রোদ থেকে চোখকে বাঁচাতে অবশ্যই polarized সানগ্লাস ব্যবহার করা উচিত।
পানিতে নামার সময় আপনার মোবাইল ফোন, টাকা-পয়সা বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিরাপদে রাখার জন্য একটি জলরোধী ব্যাগ ব্যবহার করুন। এই ধরনের ব্যাগে আপনার জিনিসপত্র সুরক্ষিত থাকবে এবং ভিজে যাওয়ার কোনো ভয় থাকবে না।
সবশেষে, একটি ছোট প্রাথমিক চিকিৎসার কিট সঙ্গে রাখা খুবই জরুরি। এই কিটে—ব্যান্ডেজ, অ্যান্টিসেপটিক, তুলা, গজ, অ্যান্টিহিস্টামিন—এর মতো প্রয়োজনীয় জিনিস রাখা উচিত। এছাড়াও, অপ্রত্যাশিত কোনো ঘটনার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসার জ্ঞান রাখা এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার মানসিকতা তৈরি রাখা দরকার।
সতর্কতা অবলম্বন করে সাঁতার কাটলে, পানিতে ডুবে যাওয়ার মতো দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব। আপনার এবং আপনার পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে, এই বিষয়গুলো সবসময় মনে রাখুন।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার