যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ২০২৩ সালে স্ব-চালিত ট্যাক্সি সেবা চালুর পরিকল্পনা করছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওয়েইমো (Waymo)। সম্প্রতি এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, যা স্বয়ংক্রিয় গাড়ি প্রযুক্তির বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
২০২৬ সাল থেকে এই সেবাটি পুরোদমে চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
বর্তমানে, ওয়েইমোর স্ব-চালিত ট্যাক্সিগুলো ওয়াশিংটন ডিসির রাস্তাগুলো চিহ্নিত করার কাজ করছে। তবে, যাত্রী সুরক্ষার জন্য একজন চালক সব সময় গাড়ির আসনে উপস্থিত থাকছেন এবং প্রয়োজনে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিতে প্রস্তুত থাকছেন।
ওয়াশিংটন ডিসি কর্তৃপক্ষের নিয়ম অনুযায়ী, পুরোপুরি চালকবিহীন সেবা চালু করার আগে এই সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
ওয়েইমো কর্তৃপক্ষের আশা, তারা খুব শীঘ্রই নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন লাভ করবে এবং তাদের ‘ওয়েইমো ওয়ান’ অ্যাপের মাধ্যমে সম্পূর্ণ চালকবিহীন ট্যাক্সি সেবা চালু করতে পারবে।
ওয়েইমোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এই অত্যাধুনিক সেবা নিয়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে আসতে পেরে খুবই আনন্দিত। এই শহরের বাসিন্দা, সেখানে কাজ করা মানুষ এবং সারা বিশ্ব থেকে আসা পর্যটকদের জন্য এটি একটি নির্ভরযোগ্য এবং আরামদায়ক পরিবহন ব্যবস্থা হবে।
ওয়াশিংটন ডিসি ছাড়াও, ওয়েইমো তাদের স্ব-চালিত ট্যাক্সি সেবা মিয়ামি শহরেও চালু করার পরিকল্পনা করছে। এর আগে, ফিনিক্স, লস অ্যাঞ্জেলেস, সান ফ্রান্সিসকো বে এলাকা এবং টেক্সাসের অস্টিন শহরে এই সেবা চালু করা হয়েছে।
এছাড়া, জনপ্রিয় ট্যাক্সি সেবাদাতা কোম্পানি উবারের সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আটলান্টাতেও তারা এই সেবা শুরু করতে যাচ্ছে।
ওয়েইমোর এই অগ্রযাত্রা প্রমাণ করে যে, স্ব-চালিত গাড়ির প্রযুক্তি এখন আর কোনো কল্পনাবিলাস নয়, বরং এটি বাস্তবতার দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
বর্তমানে ওয়েইমো প্রতি সপ্তাহে প্রায় ২ লক্ষ ট্রিপ সম্পন্ন করছে, যা তাদের বাজারের শীর্ষস্থানে রেখেছে।
অবশ্য, ওয়েইমোর একচ্ছত্র আধিপত্যের এই দৌড়ে অন্যান্য প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোও পিছিয়ে নেই। অ্যামাজন এবং টেসলার মতো বড় কোম্পানিগুলোও তাদের নিজস্ব স্ব-চালিত ট্যাক্সি সেবা চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এছাড়াও, আরেক রাইড-শেয়ারিং কোম্পানি, লিফট, আটলান্টা এবং ডালাসে এই ধরনের সেবা চালু করার পরিকল্পনা করছে।
ওয়েইমোর এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ কয়েক বছরের গবেষণা ও উন্নয়ন।
গুগলের একটি গোপন প্রকল্প হিসেবে ২০০৯ সালে এর যাত্রা শুরু হয়েছিল, যা ২০১৬ সালে আলফাবেট ইনকর্পোরেটেডের অধীনে একটি স্বতন্ত্র কোম্পানি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
বাংলাদেশে এখনো স্ব-চালিত গাড়ির ধারণা ততটা পরিচিত নয়। তবে, উন্নত দেশগুলোতে এই প্রযুক্তির দ্রুত বিস্তার ঘটছে।
আমাদের দেশেও যদি এমন প্রযুক্তি আসে, তবে যানজট নিরসনে এবং উন্নত যাত্রী সেবার ক্ষেত্রে এটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস