যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুবাদ পরিষেবা পুনরায় চালু হচ্ছে, যা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (NWS) তাদের আবহাওয়া বিষয়ক পূর্বাভাসগুলি অন্যান্য ভাষায় অনুবাদ করার পরিষেবাটি আবার চালু করতে যাচ্ছে। কিছুদিনের জন্য এই অনুবাদ পরিষেবাটি বন্ধ ছিল, কারণ অনুবাদ সরবরাহকারীর সঙ্গে তাদের চুক্তি শেষ হয়ে গিয়েছিল। এই ঘটনার ফলে ইংরেজি ভাষা জানেন না এমন বহু মানুষের কাছে জরুরি আবহাওয়ার সতর্কবার্তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল, যা জীবনহানির ঝুঁকিও বাড়াতে পারতো।
জানা গেছে, NWS কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরবরাহকারীর চুক্তিটি পুনরায় বহাল হয়েছে এবং আগামী সোমবারের মধ্যেই অনুবাদ পরিষেবাগুলি পুনরায় চালু করা হবে। এর ফলে, এখন থেকে স্প্যানিশ, চীনা, ভিয়েতনামি, ফ্রেঞ্চ ও সামোয়ান ভাষায় আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া যাবে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসগুলি অনুবাদ করার এই কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, শুধুমাত্র জরুরি অবস্থার সতর্কবার্তাই নয়, পর্যটন, পরিবহন এবং শক্তি-সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজের সঙ্গে জড়িত মানুষেরাও নিয়মিতভাবে এই পূর্বাভাসগুলির উপর নির্ভরশীল। উদাহরণস্বরূপ, ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সময়মতো সতর্কবার্তা পাওয়া গেলে মানুষ নিরাপদ স্থানে সরে যেতে পারে, যা জীবন বাঁচানোর জন্য অত্যন্ত জরুরি।
আগে, NWS কর্মীরা ম্যানুয়ালি এই অনুবাদ করতেন, যা সময়সাপেক্ষ এবং সবসময় কার্যকর ছিল না। পরে, তারা ‘Lilt’ নামক একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) কোম্পানির সাহায্য নেওয়া শুরু করে। এই AI প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্যভাবে অনুবাদ করা সম্ভব হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৬৮ মিলিয়ন মানুষ আছেন যারা বাড়িতে ইংরেজি ছাড়া অন্য ভাষায় কথা বলেন। এর মধ্যে প্রায় ৪২ মিলিয়ন স্প্যানিশভাষী মানুষ রয়েছেন। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছে আবহাওয়ার পূর্বাভাস পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনুবাদ পরিষেবা চালু রাখা অপরিহার্য।
উল্লেখ্য, NWS যে সংস্থার অধীনে, সেই ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (NOAA) যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এজেন্সিগুলির মধ্যে অন্যতম, যাদের কর্মিবাহিনী ও বাজেট কাটছাঁটের শিকার হতে হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি আমরা বিষয়টি বিবেচনা করি, তাহলে আবহাওয়ার পূর্বাভাস এবং তার অনুবাদ পরিষেবাগুলির গুরুত্ব আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আমাদের দেশে কৃষিকাজ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রা—সবকিছুই আবহাওয়ার পূর্বাভাসের ওপর অনেকখানি নির্ভরশীল। বিশেষ করে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সময়মতো সতর্কবার্তা পাওয়া গেলে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি এড়ানো সম্ভব। বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরও (Bangladesh Meteorological Department – BMD) নিয়মিতভাবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়ে থাকে, যা আমাদের দেশের মানুষের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।
তথ্য সূত্র: CNN