বিয়ে বাড়ির খবর পড়ার এক আজব নেশা, আর তা থেকেই জন্ম নিলো নতুন এক উপাখ্যান। মানুষের জীবনের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে কেন্দ্র করে যারা ভালোবাসার গল্প তৈরি করেন, তাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে বহু বছরের পুরোনো একটি অভ্যাস।
পত্রিকার পাতায় প্রকাশিত বিয়ের ঘোষণাগুলো যেন এক একটি গল্পের বীজ, যা থেকে জন্ম নেয় নতুন নতুন চরিত্র আর তাদের ভালোবাসার কাহিনি।
কথাটি বলেছেন লেখক লিয়ান ডোলান।
তাঁর নতুন উপন্যাস ‘আবিগাইল অ্যান্ড অ্যালেক্সা সেভ দ্য ওয়েডিং’-এর অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে এই বিয়ের ঘোষণার প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের ‘স্টাইল’ বিভাগে প্রকাশিত এইসব খবর তাঁর শৈশব আর কৈশোরের স্মৃতি জুড়ে রয়েছে।
সত্তরের দশকে, রবিবার সকালে নাস্তার টেবিলে বসে বোনেরা উচ্চস্বরে এইসব ঘোষণা পাঠ করতেন।
বিশেষ করে যখন কোনো নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় বা পরিবারের কারো নাম আসত, তখন তাঁদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো।
এমনকি, বর-কনের পূর্বপুরুষদের জন্মস্থান নিয়েও তাঁদের আগ্রহ ছিল তুঙ্গে।
লিয়ানের নিজের বিয়েটাও ছিল সাদামাটা।
১৯৯৩ সালে তিনি যখন বিয়ের পিঁড়িতে বসেন, তখন চেয়েছিলেন একটু অন্যরকম কিছু করতে।
তাঁর মা-ও তাতে রাজি ছিলেন।
বিয়ের পোশাক কিনতে গিয়ে হাসতে হাসতে তাঁরা প্রায় দোকান থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন।
তবে শেষ পর্যন্ত ‘ব্যাডগলি মিশকা’র ডিজাইন করা একটি শর্ট লেইস গাউন পছন্দ হয় তাঁর।
বিয়ের এই আনন্দময় জগৎটা যেন সবসময়ই লেখককে আকর্ষণ করে।
বর্তমানে, তিনি এই বিষয়টির ওপর গবেষণা করছেন।
বিয়ের কনে এবং বরের মায়ের চরিত্র নিয়ে লেখা তাঁর উপন্যাস ‘আবিগাইল অ্যান্ড অ্যালেক্সা সেভ দ্য ওয়েডিং’-এর জন্য তিনি প্রচুর সময় ব্যয় করেছেন।
তিনি বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠানের ভিডিও দেখেছেন, কনেপক্ষের সমস্যাগুলো নিয়ে লেখা কলামগুলো পড়েছেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিয়ের ছবিগুলোও খুঁটিয়ে দেখেছেন।
তাঁর মতে, বিয়ের মূল আকর্ষণ আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে নয়, বরং ভালোবাসায়।
২০১৭ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত ‘ভাউস’ বিভাগে বিয়ের ঘোষণার ধারণাটি নতুনভাবে উপস্থাপন করা হয়।
যেখানে সম্পর্কের গভীরতা আর ভালোবাসার গল্পগুলো বেশি গুরুত্ব পায়।
সেখানে শিক্ষক, সমাজকর্মী, এমনকী, সমকামী যুগলদের বিয়ের খবরও প্রকাশিত হতে দেখা যায়।
বিয়ে মানেই তো দুটি মানুষের একসঙ্গে পথ চলা, যেখানে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এবং প্রিয়জনদের উপস্থিতিতে ভবিষ্যৎ জীবনের অঙ্গীকার করা হয়।
লিয়ান ডোলান এখনো অপরিচিত দম্পতিদের বিয়ের ঘোষণাগুলো আনন্দের সঙ্গে পড়েন।
তাঁর মায়ের একটি কথা আজও তাঁর কানে বাজে, “আজ বিয়ের জন্য একটা দারুণ দিন।”
তথ্য সূত্র: পিপল