আমেরিকার টেক্সাসের বাসিন্দা ৩৭ বছর বয়সী সামান্থা ব্রায়ান্টের জীবন পরিবর্তনের এক অসাধারণ গল্প। অতিরিক্ত ওজনের কারণে একসময় সামান্য লাফ দিতেও পারতেন না তিনি।
কিন্তু এক বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে তিনি শুধু ১০০ পাউন্ডের বেশি ওজন কমিয়েছেন তাই নয়, জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিকেও নতুন করে গড়ে তুলেছেন। মা’কে ভালোভাবে দেখাশোনা করার উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। আর এই পরিবর্তনের সাক্ষী থেকেছে বিশ্ব, বিশেষ করে সামাজিক মাধ্যম।
বছরখানেক আগের কথা, যখন সামান্থা তার মায়ের দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন। একদিন মায়ের সামান্য অসুস্থতায় তাকে ধরতে গিয়ে ব্যর্থ হন তিনি।
সেই মুহূর্তেই তিনি উপলব্ধি করেন, নিজের স্বাস্থ্য ভালো করাটা জরুরি। কারণ, সুস্থ না থাকলে তিনি মায়ের প্রতি দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারবেন না। এরপরই শুরু হয় তার ওজন কমানোর যাত্রা।
এই পরিবর্তনের সাক্ষী হতে টিকটকে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে শুরু করেন সামান্থা। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তার ভিডিওগুলি ভাইরাল হয়ে যায়, যা অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। তার ওজন কমানোর এই লড়াইয়ে, তিনি শুধু শারীরিক পরিবর্তনই আনেননি, বরং নতুন করে অনেক কিছু করতে শিখেছেন।
শুরুর দিকে, সামান্য কিছু কাজ করতেও তার খুব অসুবিধা হতো। গোড়ালি পর্যন্ত পৌঁছানো বা সামান্য নড়াচড়া করাও কঠিন ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে তিনি বুঝতে পারেন, চেষ্টা করলে সবই সম্ভব।
একসময় তিনি খেয়াল করেন, লাফ দেওয়া তার জন্য প্রায় অসম্ভব। এরপর তিনি কীভাবে লাফানো যায়, সেই চেষ্টা শুরু করেন। প্রথমবার চেষ্টা করতে গিয়ে তিনি পড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু হাল ছাড়েননি।
সামান্থা জানান, তিনি তার মায়ের কথা ভেবেই এই পরিবর্তনগুলো এনেছেন। তিনি চান, দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে মাকে সাহায্য করতে। টিকটকে তার এই যাত্রা অসংখ্য মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। তার ফলোয়ারের সংখ্যা বর্তমানে ৬৮ হাজারের বেশি।
নিজের এই সাফল্যের জন্য তিনি অন্যদের কাছ থেকে পাওয়া পরামর্শকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেন। ওজন কমানোর সময় অনেকে তাকে নিয়ে হাসাহাসি করলেও, সেসব মন্তব্যে তিনি কান দেননি। বরং যারা তাকে সাহায্য করেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
তিনি মনে করেন, অন্যদের সাহায্য ছাড়া এত দ্রুত এই পরিবর্তন আনা সম্ভব হতো না। সামান্থা এখন প্রতিদিন প্রায় ৮.৮ কিলোমিটার (৫.৫ মাইল) হাঁটেন।
তার লক্ষ্য, গ্রীষ্মকালে এই হাঁটার পরিমাণ কমিয়ে দৌড়ানো শুরু করা। যারা তার মতো ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য তিনি কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।
ধীরে ধীরে চেষ্টা করা এবং ধৈর্য ধরা—এটাই সাফল্যের মূল মন্ত্র। সামান্থার এই গল্প আমাদের দেখায়, ইচ্ছাশক্তি থাকলে যেকোনো কিছুই জয় করা সম্ভব। তার এই যাত্রা শুধু ওজন কমানোর গল্প নয়, বরং আত্ম-উন্নয়ন এবং পরিবারের প্রতি ভালোবাসার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তথ্য সূত্র: পিপল