ওজন কমানোর ওষুধ: বাস্তবে কতটা কাজ করে? নতুন গবেষণা!

ওজন কমানোর ওষুধগুলি, যেমন ওজেম্পিক এবং মাউঞ্জারো, বাস্তব জীবনে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তুলনায় ততটা কার্যকরী নাও হতে পারে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় এমনটাই দেখা গেছে।

‘ওবেসিটি জার্নাল’-এ প্রকাশিত এই গবেষণায় প্রায় ৮,০০০ মানুষের উপর পরীক্ষা চালানো হয়, যাদের গুরুতর স্থূলতা ছিল। ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে, তাদের সেমাগ্লুটাইড বা টির্জেপাটাইড ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল, যা মূলত জিএলপি-১ (GLP-1) ওষুধ হিসাবে পরিচিত।

জিএলপি-১ (GLP-1) হলো ‘গ্লুকাগন-লাইক পেপটাইড-১ রিসেপ্টর অ্যাগোনিস্ট’। এই ওষুধগুলো মস্তিষ্কের উপর কাজ করে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

ওজেম্পিক এবং ওবেগি (Wegovy) সেমাগ্লুটাইডের বাণিজ্যিক নাম, অন্যদিকে মাউঞ্জারো এবং জেপবাউন্ড (Zepbound) হলো টির্জেপাটাইডের পরিচিত কয়েকটি নাম।

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ওষুধ নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে যারা দ্রুত (৩ মাসের মধ্যে) ওষুধ নেওয়া বন্ধ করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে গড় ওজন কমেছে মাত্র ৩.৬ শতাংশ।

অন্যদিকে, যারা তুলনামূলকভাবে দেরিতে (৩-১২ মাসের মধ্যে) ওষুধ নেওয়া বন্ধ করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে ওজন কমেছে ৬.৮ শতাংশ।

তবে, যারা নিয়মিত ওষুধ চালিয়ে গিয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে প্রায় ১২ শতাংশ পর্যন্ত ওজন কমেছে।

গবেষণায় আরও দেখা যায়, এই ওষুধগুলির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের ক্ষেত্রে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ওজন কমেছিল।

বাস্তবে ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে রোগীদের মধ্যে ওষুধ বন্ধ করে দেওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।

এর প্রধান কারণগুলির মধ্যে রয়েছে ওষুধের উচ্চ মূল্য, স্বাস্থ্য বীমার সীমাবদ্ধতা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং ওষুধের সরবরাহ সংকট।

গবেষণার প্রধান লেখক, ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের গবেষক ড. হ্যামলেট গাসোয়ান জানান, “বাস্তব জীবনে এই ওষুধগুলির ব্যবহার এবং ফলাফলের এই ভিন্নতা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী এবং রোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এর মাধ্যমে ওষুধ বন্ধ করার কারণ এবং ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সঠিক মাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্থূলতা একটি জটিল সমস্যা এবং এর সমাধানে শুধুমাত্র ওষুধের উপর নির্ভর করা উচিত নয়।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।

ওজন কমানোর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা যেতে পারে, তবে সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থ জীবনের জন্য জীবনযাত্রার পরিবর্তন অপরিহার্য।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *