ওজন কমানোর পুরনো একটি পথের পথিক, ‘ওয়েটওয়াচার্স’ দেউলিয়া হওয়ার জন্য আবেদন করেছে। এক সময়ের জনপ্রিয় এই ডায়েট কোম্পানিটি, বাজারে ওজন কমানোর নতুন কিছু ওষুধের (যেমন ওজেম্পিক) আবির্ভাবের কারণে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।
খবর অনুযায়ী, কোম্পানিটি ১.১৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করতে এবং তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে নতুন করে সাজাতে চাইছে।
ওয়েটওয়াচার্স, যা এখন ‘ডব্লিউ ডব্লিউ ইন্টারন্যাশনাল’ নামে পরিচিত, মঙ্গলবার (প্রকাশের তারিখ অনুযায়ী) যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে চ্যাপ্টার ১১ দেউলিয়া সুরক্ষার জন্য আবেদন করেছে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারা তাদের দেনা পরিশোধ করতে পারবে এবং ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে পরিকল্পনা করতে পারবে।
কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তারা কমোন্টে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “আমরা দ্রুত পরিবর্তনশীল ওজন ব্যবস্থাপনার বাজারে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে, নতুনত্ব আনতে এবং সদস্যদের জন্য আরও ভালো কিছু করতে চাই।” তিনি আরও যোগ করেন, “ওজন কমানোর ধারণা যখন স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের দিকে ঝুঁকছে, তখন আমাদের লক্ষ্য হলো বিজ্ঞানসম্মত, নির্ভরযোগ্য এবং সামগ্রিক সমাধান দেওয়া, যা কমিউনিটি সমর্থন এবং দীর্ঘস্থায়ী ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে তৈরি।”
১৯৬৩ সালে জ্যাঁ নিডেট নামের একজন উদ্যোক্তা এই কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা করেন। একসময় ডায়েট ইন্ডাস্ট্রিতে ওয়েটওয়াচার্স একটি পরিচিত নাম ছিল।
কিন্তু সম্প্রতি ওজেম্পিক এবং ওবেগভির মতো ওষুধের কারণে তাদের ব্যবসা কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য, ২০২৩ সালে কোম্পানিটি টেলিহেলথ পরিষেবা প্রদানকারী ‘সিকোয়েন্স’ কিনে নেয়, যা তাদের ওজন কমানোর ওষুধের ব্যবসায় প্রবেশ করতে সহায়তা করে।
এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম হলো অপরাহ উইনফ্রে। তিনি একসময় এই কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে ছিলেন, কিন্তু পরে অ্যান্টি-ওবেসিটি ওষুধ সেবন করার কথা জানানোর পর পদত্যাগ করেন।
ওজন কমানোর ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ‘নোভো নরডিস্ক’-এর শেয়ার বুধবার প্রায় ৬ শতাংশ বেড়েছে। ডেনমার্কের এই কোম্পানিটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) তাদের ওষুধের নকল সংস্করণ তৈরি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়ার পর, তাদের বিক্রি আরও বাড়বে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওজন কমানোর ওষুধের ক্রমবর্ধমান ব্যবহার এবং এই সংক্রান্ত বাজারের পরিবর্তনের ফলে, পুরনো ব্যবসায়িক মডেলগুলোর জন্য টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই ঘটনা বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ব্যবসায়িক মডেলের ওপর নতুন প্রযুক্তির প্রভাবের একটি উদাহরণ।
বাংলাদেশেও স্বাস্থ্যখাতে নতুন নতুন উদ্ভাবন আসছে, তাই এই ধরনের পরিবর্তনগুলো আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা