যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউস এবার ইস্টার এগ রোল অনুষ্ঠানের জন্য কর্পোরেট স্পন্সরশিপের দিকে ঝুঁকছে। কিন্তু এই পদক্ষেপ ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে, যা নজিরবিহীন বলেই মনে করা হচ্ছে।
সাধারণত, এই অনুষ্ঠানটি আমেরিকান এগ বোর্ড এবং হোয়াইট হাউস হিস্টোরিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের মতো সংস্থাগুলোর মাধ্যমে ব্যক্তিগত অনুদানে পরিচালিত হয়ে থাকে।
অনুষ্ঠানটির জন্য কর্পোরেট স্পন্সরশিপের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যেখানে একটি প্যাকেজের মূল্য ৭৫ হাজার থেকে ২ লাখ ডলার পর্যন্ত হতে পারে। এই অর্থের বিনিময়ে লোগো ও ব্র্যান্ড প্রদর্শনের সুযোগ, বিশেষ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ এবং হোয়াইট হাউসে ভ্রমণেরও প্রস্তাব রয়েছে।
এই ধরনের স্পন্সরশিপের প্রস্তাব নিয়ে প্রাক্তন সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তাঁদের মতে, সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে ব্যক্তিগত লাভের উদ্দেশ্যে এমন কার্যকলাপ নৈতিকতার পরিপন্থী।
জর্জ ডব্লিউ বুশ সরকারের হোয়াইট হাউসের কাউন্সেল অফিসের প্রাক্তন এক কর্মকর্তা, রিচার্ড পেইন্টার, এই ধরনের প্রস্তাব অনুমোদন করা হলে তীব্র আপত্তি জানাতেন বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁর মতে, হোয়াইট হাউসের এই ধরনের কার্যক্রম খেলার মাঠের মতো হওয়া উচিত নয়, যেখানে অর্থ উপার্জনের জন্য লোগো ব্যবহার করা হবে।
হোয়াইট হাউসের এমন পদক্ষেপ এই প্রথম নয়। এর আগে, ট্রাম্প প্রশাসনের সময় হোয়াইট হাউসের মাঠে একটি অনুষ্ঠানে টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্কের উপস্থিতিও সমালোচিত হয়েছিল। এমনকি ২০২০ সালের রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনও এই স্থানে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে হারবিংগার নামক একটি ইভেন্ট প্রোডাকশন কোম্পানি। কোম্পানিটি অতীতেও হোয়াইট হাউসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করেছে।
হারবিংগারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সংগৃহীত সকল অর্থ হোয়াইট হাউস হিস্টোরিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে পরিচালিত হবে।
তবে, এই স্পন্সরশিপের ফলে সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে স্বার্থের সংঘাত সৃষ্টি হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ওয়াশিংটনের সিটিজেনস ফর রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড এথিক্স (সিআরইডব্লিউ)-এর প্রধান আইনজীবী ডোনাল্ড শেরম্যানের মতে, হোয়াইট হাউসের তরফে কর্পোরেট স্পন্সরশিপের জন্য সরাসরি আবেদন আগে কখনো দেখা যায়নি।
অতীতেও এই ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনে কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল, এমনকি কোকা-কোলার মতো সংস্থার পানির বোতলে তাদের লোগো ব্যবহারের ক্ষেত্রেও আপত্তি জানানো হয়েছিল।
এই ঘটনায় হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, ঘটনাটি সরকারি নীতি এবং নৈতিকতার মানদণ্ড নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন