টিভি সিরিজ “দ্য হোয়াইট লোটাস” বর্তমানে দর্শক এবং সমালোচকদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এই সিরিজের চরিত্রগুলোর পোশাক, সংলাপ বা তাদের আশেপাশের জিনিসপত্র—সবকিছুই যেন তাদের ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তোলে।
সম্প্রতি, এই সিরিজের চরিত্রদের হাতে দেখা যাওয়া কিছু বই নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে, যা দর্শকদের মধ্যে বেশ আগ্রহ তৈরি করেছে। অনেকের মতে, এই বইগুলো চরিত্রদের ভেতরের জগৎ এবং তাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অনেক ইঙ্গিত বহন করে।
উদাহরণস্বরূপ, সিরিজের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হলো লক্লান র্যাটলিফ, যাকে দেখা যায় নাট হ্যামসনের লেখা “হাঙ্গার” বইটি পড়তে। বইটিতে ক্ষুধা ও অস্তিত্বের সংকট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যা লক্লানের নিজের জীবন এবং তার মানসিক অবস্থার সঙ্গে গভীর মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
আবার, ভিক্টোরিয়া নামের চরিত্রটির হাতে দেখা যায় এফ স্কট ফিটজেরাল্ডের “দ্য বিউটিফুল অ্যান্ড দ্য ড্যামড”। এই উপন্যাসটি ক্ষমতা, অর্থ এবং বিলাসিতার মোহে আচ্ছন্ন এক শ্রেণির মানুষের গল্প বলে, যা ভিক্টোরিয়ার চরিত্রে প্রতিফলিত হয়।
আসলে, নির্মাতারা সচেতনভাবে এই ধরনের সূক্ষ্ম বিষয়গুলো ব্যবহার করেন, যা “ইস্টার এগ” নামে পরিচিত। “ইস্টার এগ” হলো সিনেমা, টিভি শো, বা ভিডিও গেমসের মধ্যে লুকানো বার্তা, যা দর্শকদের জন্য একটি বিশেষ আকর্ষণ তৈরি করে।
“হোয়াইট লোটাস”-এর নির্মাতা, মাইক হোয়াইট, এই কৌশলটি ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছেন। সিরিজের দৃশ্যে ব্যবহৃত প্রতিটি বই নির্বাচন করার পেছনে রয়েছে গভীর পরিকল্পনা। এমনকি, কিছু বই সেটের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে, যা চরিত্রদের আরো ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করে।
যেমন, একটি দৃশ্যে দেখা যায়, চেলসি নামের একজন চরিত্র রুমি’র কবিতা পড়ছেন। এই তরুণীর চরিত্রে ভালোবাসার গভীরতা এবং আধ্যাত্মিকতার একটি দিক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
অন্যদিকে, লরি নামের একটি চরিত্র এম্মা স্ট্রাবের “মডার্ন লাভার্স” বইটি পড়ছে, যা জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে বন্ধুত্বের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে। এছাড়া, যারা বই পড়তে ভালোবাসেন, তাদের মধ্যে এই ধরনের সূক্ষ্ম ইঙ্গিতগুলো নিয়ে আলোচনা করার প্রবণতা দেখা যায়।
আসলে, “হোয়াইট লোটাস”-এর নির্মাতারা বইয়ের মাধ্যমে চরিত্রদের মানসিক অবস্থা এবং তাদের জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। এই ধরনের কৌশল দর্শকদের জন্য একটি অতিরিক্ত আকর্ষণ তৈরি করে, যা গল্প বলার একটি চমৎকার উদাহরণ।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান