থাইল্যান্ডে ‘হোয়াইট লোটাস’-এ অভিনয়ের অভিজ্ঞতা: চমকে যাওয়ার মতো!

থাইল্যান্ডে ‘হোয়াইট লোটাস’-এর সেটে: একজন ভারতীয় নারীর অভিজ্ঞতা

পর্যটকদের কাছে থাইল্যান্ড একটি স্বপ্নের গন্তব্য। কেউ যায় আধ্যাত্মিকতার খোঁজে, আবার কেউবা আনন্দ-উল্লাসের মধ্যে নিজেকে খুঁজে নিতে।

সম্প্রতি, ‘হোয়াইট লোটাস’ সিরিজের তৃতীয় সিজনের শুটিং হয়েছে থাইল্যান্ডে। এই সিরিজে একজন অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে ‘ট্রাভেল অ্যান্ড লিজার’-এ।

সেই নিবন্ধের আলোকে থাইল্যান্ডে একজন ভারতীয় নারীর অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হলো।

লেখিকা, যিনি নিজেও একজন পর্যটক, থাইল্যান্ডে বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে প্রথমে একটি মেডিটেশন সেন্টারে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগ দেন। সেখানে তিনি সন্ন্যাসীদের জীবনযাত্রা কাছ থেকে দেখেন।

ভোরবেলা পাখির ডাক আর ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দে ঘুম ভাঙত তাঁর। ধীরে ধীরে তিনি ধ্যান, মন্ত্র পাঠ এবং ধর্মচর্চায় অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন।

সেখানের জীবন ছিল শৃঙ্খলার মোড়কে বাঁধা। এই সময়কালে তিনি একটি নতুন সংস্কৃতি ও জীবনধারা সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন।

লেখিকা সন্ন্যাস জীবন ত্যাগ করে ব্যাংককের কোয়াও সান রোডে যান। সেখানে নাইট লাইফের ঝলমলে পরিবেশে তিনি বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করেন।

এক রাতের পার্টি শেষে তিনি উপলব্ধি করেন, থাইল্যান্ড যেন দুটি ভিন্ন জগতের সমন্বয়। একদিকে গভীর আধ্যাত্মিকতা, অন্যদিকে উন্মাতাল আনন্দ।

তিনি দু’দিকেই নিজেকে আবিষ্কার করেন।

কিছুদিন পর তিনি কোহ ফাঙ্গান দ্বীপে যান। দ্বীপটির একদিকে ছিল আধ্যাত্মিক কেন্দ্র, যেখানে ইয়োগা ও তন্ত্রের কর্মশালা হতো।

অন্য দিকে ছিল ‘ফুল মুন পার্টি’-র উন্মাদনা, যেখানে সবাই রং মেখে, ডিজে’র তালে নেচে দিন কাটাতো।

এখানে লেখিকা ‘হোয়াইট লোটাস’ সিরিজের সেটে অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান।

কোহ সামুই দ্বীপে এই সিরিজের শুটিং হয়। লেখিকা সেখানে প্রতিদিন ২,২৫০ থাই বাত (বর্তমান বিনিময় হারে প্রায় ৭,০০০ বাংলাদেশী টাকা) পারিশ্রমিকের বিনিময়ে একজন ধ্যান শিক্ষার্থীর চরিত্রে অভিনয় করতেন।

ভোর হওয়ার আগে সেটের সকলে আসতেন এবং সকলে মিলে চা-কফি পান করতেন। সেটে আসা বিভিন্ন দেশের পর্যটক ও স্থানীয়দের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

এই সিরিজে তিনি সারাহ ক্যাথরিন হুক, পার্কার পসি, এবং পরিচালক মাইক হোয়াইটের মতো বিখ্যাত ব্যক্তিদের সঙ্গে কাজ করেছেন।

শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা লেখকের মনে গভীর ছাপ ফেলেছিল। বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের জীবনযাত্রা এবং পর্যটকদের জীবন— উভয় দিকেই তিনি ভিন্নতা খুঁজে পান।

তাঁর মতে, থাইল্যান্ডে ভ্রমণের আসল মজা হলো, এখানকার মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়া।

পর্যটকদের জীবনযাত্রা অনেক সময় একঘেয়ে এবং ভাসা-ভাসা হয়। গভীর অন্তর্দৃষ্টির অভাবে অনেক সময় তাঁরা অন্য সংস্কৃতিকে পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারেন না।

‘হোয়াইট লোটাস’-এর শুটিংয়ের সময় লেখিকা থাইল্যান্ডের সংস্কৃতি, আধ্যাত্মিকতা এবং পর্যটকদের জীবন সম্পর্কে নতুন ধারণা লাভ করেন। তাঁর মনে হয়, থাইল্যান্ড ভ্রমণের আসল মজা এখানকার স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রা উপভোগ করা।

তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লিজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *