ট্রাম্পের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত: শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদের আমেরিকায় আশ্রয়!

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদের শরণার্থী মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি, ৫৯ জন শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানকে শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

তাদের দ্রুত শরণার্থী হিসেবে গ্রহণ করার প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করা হয়। দেশটির সরকার ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে।

জানা গেছে, এই শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদের শরণার্থী হিসেবে গ্রহণ করার কারণ হিসেবে দেশটির শ্বেতাঙ্গ কৃষকদের ওপর ভূমি সংস্কার নীতির মাধ্যমে বৈষম্য করা হচ্ছে এমন অভিযোগকে সামনে আনা হয়েছে। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

তাদের মতে, এই শ্বেতাঙ্গরা মূলত দেশটির পরিবর্তনগুলো গ্রহণ করতে না পারার কারণেই দেশ ত্যাগ করছেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেছেন, যারা যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন, তারা শরণার্থীর সংজ্ঞা পূরণ করেন না। তিনি আরও জানান, তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিষয়টি বুঝিয়ে বলেছেন।

রামাফোসা মনে করেন, শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের যে কথা ট্রাম্পকে বলা হয়েছে, তা সঠিক নয়।

শরণার্থী বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘রেফিউজিস ইন্টারন্যাশনাল’-এর প্রেসিডেন্ট জেরেমি কোনিডাইক এই পদক্ষেপকে ‘জাতিগত অভিবাসন কর্মসূচি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তার মতে, বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়া শরণার্থীদের সাহায্য করা উচিত, যেখানে এই শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় তাদের অনেক বেশি প্রয়োজন।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের পেছনে দক্ষিণ আফ্রিকার ভূমি সংস্কার নীতি একটি বড় কারণ। এই নীতির মাধ্যমে দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীর মধ্যে জমির মালিকানা পুনর্বণ্টনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

এক সময় শ্বেতাঙ্গদের সুবিধার জন্য কৃষ্ণাঙ্গদের জমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল।

আফ্রিকানদের জমি সংক্রান্ত অধিকার ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার একটি আইন প্রণয়ন করেছে। এই আইনের মাধ্যমে সরকার কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ ছাড়াই জমি অধিগ্রহণ করতে পারবে, যদি তা জনস্বার্থে প্রয়োজন হয়।

এই পদক্ষেপের কারণে শ্বেতাঙ্গ কৃষক ও খামারিদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ এনে দেশটির জন্য সাহায্য বন্ধ করে দেয়। এছাড়াও, ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় জানিয়েছিলেন, নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে যে সকল কৃষক পরিবার দক্ষিণ আফ্রিকা ত্যাগ করতে চাইছেন, তাদের দ্রুত নাগরিকত্ব দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে স্বাগত জানানো হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *