বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-র সদস্য রাষ্ট্রগুলি একটি নতুন ‘মহামারী চুক্তি’ নিয়ে অবশেষে ঐকমত্যে পৌঁছেছে, যার মূল লক্ষ্য হল কোভিড-১৯ মহামারীর সময় হওয়া ভুলগুলি ভবিষ্যতে আর যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করা।
এই চুক্তির খসড়া তৈরি হয়েছে এবং আগামী মাসে জেনেভাতে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার বার্ষিক বৈঠকে এটি গৃহীত হওয়ার কথা রয়েছে।
কোভিড-১৯ অতিমারীর ভয়াবহ অভিজ্ঞতার পর বিশ্বজুড়ে যখন এর মোকাবিলা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তখন এই চুক্তিটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতার একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে চলেছে।
এর মূল উদ্দেশ্য হল, ভবিষ্যতে কোনো স্বাস্থ্য সংকট দেখা দিলে, দেশগুলি কীভাবে একযোগে কাজ করবে, তার একটি কাঠামো তৈরি করা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানোম গেব্রেইয়েসুস এই মুহূর্তকে ঐতিহাসিক বলে অভিহিত করেছেন, কারণ এর মাধ্যমে বিভেদ সত্ত্বেও বিভিন্ন দেশ একটি সাধারণ সমাধান খুঁজে বের করতে সক্ষম হয়েছে।
চুক্তিটিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এর মধ্যে অন্যতম হল, জরুরি পরিস্থিতিতে সব দেশের জন্য দ্রুত ভ্যাকসিন এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
বিশেষ করে দরিদ্র দেশগুলো যাতে সহজে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা পায়, তা নিশ্চিত করা হবে।
এছাড়া, কোনো ভাইরাস সংক্রান্ত নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রেও দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো হবে, যাতে সবাই এর সুফল পেতে পারে।
তবে এই চুক্তিতে কিছু দুর্বলতাও রয়েছে।
যেমন, কোনো দেশ যদি চুক্তিটি মানতে না চায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই।
যদিও চুক্তিতে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য কূটনৈতিক আলোচনা এবং সালিশি ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে।
এই চুক্তির প্রেক্ষাপটে, কোভিড-১৯ মহামারীর সময় কিছু দেশের পদক্ষেপ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
যেমন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং আর্জেন্টিনা এই চুক্তিতে স্বাক্ষর নাও করতে পারে।
তবে, এই চুক্তির ফলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশগুলোও মহামারীর মোকাবিলায় আরও প্রস্তুত হতে পারবে এবং সময়মতো প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস