বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ভবিষ্যতে মহামারী মোকাবিলায় প্রস্তুতি আরও জোরদার করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিতে পৌঁছেছে। জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য অ্যাসেম্বলিতে (World Health Assembly) মঙ্গলবার এই চুক্তিটি গৃহীত হয়, যেখানে সদস্য রাষ্ট্রগুলো এটিকে স্বাগত জানিয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারীর সময় সমন্বয়হীনতা ও আন্তর্জাতিক বিশৃঙ্খলার পুনরাবৃত্তি রোধ করাই এই চুক্তির মূল লক্ষ্য।
এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো ভবিষ্যতের মহামারীগুলোতে সমন্বয় বৃদ্ধি করা, নজরদারি বাড়ানো এবং ঔষধ ও ভ্যাকসিনের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস (Tedros Adhanom Ghebreyesus) এই দিনটিকে ঐতিহাসিক হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন, এই চুক্তি জনস্বাস্থ্য, বিজ্ঞান এবং বহুপাক্ষিকতার জন্য একটি বিজয়। এটি নিশ্চিত করবে যে আমরা সম্মিলিতভাবে ভবিষ্যতের মহামারী থেকে বিশ্বকে আরও ভালোভাবে রক্ষা করতে পারব।
তবে, এই চুক্তির চূড়ান্ত পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রের অনুপস্থিতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সাধারণত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সবচেয়ে বেশি আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র।
কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন সংস্থাটি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় এবং তহবিলের যোগান বন্ধ করে দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানব পরিষেবা সচিব রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র (Robert F Kennedy Jr.) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে “নিস্তেজ” বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি এই চুক্তিটিকে সমর্থন করেন না এবং অন্যান্য দেশগুলোকে তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এই চুক্তিতে প্যাথোজেন অ্যাক্সেস এবং বেনিফিট-শেয়ারিং (PABS) ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে, মহামারী সৃষ্টিকারী রোগজীবাণুগুলির (pathogens) সহজলভ্যতা এবং ভ্যাকসিন, পরীক্ষা ও চিকিৎসার মতো সুবিধাগুলো ভাগাভাগি করে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
দেশগুলোকে ২০২৬ সালের মে মাসের মধ্যে PABS-এর বিস্তারিত কাঠামো তৈরি করতে হবে। চুক্তিটি কার্যকর করতে হলে কমপক্ষে ৬০টি দেশকে এটি অনুমোদন করতে হবে।
এই চুক্তির সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করবে এর বাস্তবায়নের ওপর। কোভিড-১৯ মহামারীর অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বিশ্ব এখন ভবিষ্যতের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মোকাবিলায় আরও প্রস্তুত হতে চাইছে।
এই চুক্তির মাধ্যমে বিশ্ব একটি সমন্বিত, বিজ্ঞান-ভিত্তিক এবং ন্যায়সঙ্গত পদ্ধতির দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গেল।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা