কোলে থাকতেই সন্তানের মৃত্যু, ফুঁপিয়ে কাঁদছেন মা!

ছোট্ট শিশু ব্র্যাডি, জন্মের দুই মাস পরেই মারাত্মক হুপিং কাশি নামক রোগে আক্রান্ত হয়ে মায়ের কোলে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। ২০১১ সালে জন্ম নেওয়া ব্র্যাডির মা ক্যাথরিন আলকাইডের হৃদয়বিদারক এই ঘটনা, শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় টিকাকরণের গুরুত্বের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই দুঃখজনক অভিজ্ঞতার কথা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন।

ক্যাথরিন জানান, তিনি যখন জানতে পারেন যে তিনি মা হতে চলেছেন, তখন তিনি খুবই আনন্দিত হয়েছিলেন। এর আগে তার দুটি মেয়ে ছিল।

তিনি সবসময় একটি ছেলে সন্তানের স্বপ্ন দেখতেন। ব্র্যাডির জন্ম হওয়ার পর যেন তার পরিবার পরিপূর্ণতা পায়। কিন্তু এই আনন্দ বেশি দিন স্থায়ী হয়নি।

জন্মের মাত্র দুই মাস পরেই ব্র্যাডির শরীরে ঠান্ডা লাগার মতো কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। এরপর ধীরে ধীরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে।

চিকিৎসকেরা প্রথমে বিষয়টিকে সাধারণ ঠান্ডা-জ্বর হিসেবেই ধরে নিয়েছিলেন। কিন্তু পরে জানা যায়, ব্র্যাডি হুপিং কাশিতে আক্রান্ত হয়েছে।

হুপিং কাশি, যা সাধারণত ‘পারটুসিস’ নামেও পরিচিত, একটি গুরুতর সংক্রমণ যা শিশুদের শ্বাসতন্ত্রে আক্রমণ করে। এর প্রাথমিক লক্ষণগুলো হলো— নাক দিয়ে জল পড়া, হালকা জ্বর এবং কাশি।

কাশি বাড়তে থাকলে তা তীব্র আকার ধারণ করে এবং শিশুদের শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এই সময় কাশি হলে “হুপ” শব্দ হয়, যা এই রোগের একটি অন্যতম লক্ষণ।

চিকিৎসকেরা জানান, শিশুদের দুই মাস বয়স হওয়ার আগে হুপিং কাশির প্রতিরোধক টিকা দেওয়া যায় না।

এই কারণে, যারা শিশুদের কাছাকাছি থাকেন, তাদের টিকা নেওয়া উচিত। যুক্তরাষ্ট্রে, গর্ভবতী মহিলাদেরও এই টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

ব্র্যাডির চিকিৎসার জন্য ক্যাথরিন এবং তার পরিবারকে অনেক চেষ্টা করতে হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, ব্র্যাডিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

হাসপাতালের বিছানায় মায়ের কোলে থাকাকালীনই ব্র্যাডির জীবনাবসান হয়। এই ঘটনায় ক্যাথরিন এবং তার পরিবার গভীর শোকাহত হন।

এই ঘটনার পর ক্যাথরিন, শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় টিকাকরণের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছেন। তিনি সকলকে, বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের এবং শিশুদের কাছাকাছি বসবাসকারী ব্যক্তিদের টিকা নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করেন।

তিনি জানান, টিকা শিশুদের মারাত্মক রোগ থেকে বাঁচাতে পারে এবং পরিবারের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে সাহায্য করে।

বাংলাদেশেও শিশুদের টিকাকরণের কর্মসূচি রয়েছে। সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে শিশুদের বিনামূল্যে বিভিন্ন টিকার পাশাপাশি হুপিং কাশির প্রতিরোধক টিকাও দেওয়া হয়।

তাই, শিশুদের সুস্থ রাখতে এবং তাদের জীবন সুরক্ষিত করতে, অভিভাবকদের অবশ্যই টিকাকরণের বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের পরামর্শ অনুযায়ী শিশুদের টিকা দিতে হবে।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *