“উইকেড” ছবির পরিচালক জন এম. চু, এলফাবার চরিত্রে নিজের সংযোগ অনুভব করেন: এক ‘বহিরাগত’ এর গল্প।
জন এম. চু, যিনি আসন্ন চলচ্চিত্র “উইকেড”-এর পরিচালনা করছেন, এলফাবার চরিত্রে নিজের গভীর সংযোগ অনুভব করেন। এলফাবা, জনপ্রিয় এই সিনেমার প্রধান চরিত্র, যিনি সমাজে বহিরাগত হিসেবে পরিচিত এবং বিভিন্ন প্রতিকূলতার শিকার হন। চু’র মতে, এলফাবার এই সংগ্রামের সঙ্গে তার নিজের জীবনের অনেক মিল রয়েছে। সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, এলফাবার চরিত্রে থাকা কষ্ট এবং সমাজের চোখে একজন ‘বহিরাগত’ হওয়ার অনুভূতি তিনি ব্যক্তিগতভাবে অনুভব করেন।
যুক্তরাষ্ট্রে এশীয় আমেরিকান এবং প্যাসিফিক আইল্যান্ডার ঐতিহ্য মাস উপলক্ষে কথা বলতে গিয়ে চু তার এই অনুভূতির কথা জানান। তিনি বলেন, “আমরা এমন একটি মেয়ের গল্প বলছি যাকে তার গায়ের রঙের জন্য বিচার করা হয়। আমার মনে হয়, এটা অনেকের জীবনের গল্প। আমি জানি একজন বহিরাগত হওয়ার অনুভূতিটা কেমন। সবসময় মনে হয় নিজেকে প্রমাণ করতে হবে।
চু আরও বলেন, “আমি এমন একটি সমাজের অংশ যেখানে সবসময় শুনতে হয়, ‘অভিযোগ করো না, আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখো’। কিন্তু এমনও সময় আসে যখন আমাকে সেই ধারণাগুলো ভেঙে দিতে হয়, বলতে হয়, ‘না, এবার আমাদের সোচ্চার হতে হবে। আমাদের কথা বলতে হবে। আমি যা বলছি, তার একটা গুরুত্ব আছে।
“উইকেড” ছবিতে এলফাবার এই চরিত্র ফুটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে চু বলেন, “আমার মনে হয়, এই পর্যন্ত শিল্পী হিসেবে আমার ৪০ বছরের যাত্রা, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলার, নিজের কথা তুলে ধরার সাহস খুঁজে পাওয়ারই নামান্তর। আর এলফাবার মধ্যে সেই সব কিছুই বিদ্যমান।
“উইকেড” সিনেমাটি তৈরি করাটা ছিলো তার জন্য একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ। এর আগে তিনি “ক্রেইজি রিচ এশিয়ান্স”-এর মতো জনপ্রিয় সিনেমা তৈরি করেছেন। নিজের অতীতের কাজের অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি এই কাজটি করতে পেরেছেন বলে জানান। “উইকেড”-এর গল্পটি এল. ফ্রাঙ্ক বাউমের ১৯০০ সালের শিশুদের বই “দ্য ওয়ান্ডারফুল উইজার্ড অফ ওজ” এবং ১৯৩৯ সালের “দ্য উইজার্ড অফ ওজ” সিনেমা অবলম্বনে তৈরি হয়েছে। সিনেমায় আরিয়ানা গ্রান্ডে এবং সিনথিয়া এরিভো-কে যথাক্রমে গ্লিন্ডা ও এলফাবার চরিত্রে দেখা যাবে।
চু বিশেষভাবে গ্লিন্ডার চরিত্রটির প্রসঙ্গে বলেন, “গ্লিন্ডা তার নিজের জগতে বাস করে। দ্বিতীয় সিনেমাতে আমরা এটা নিয়ে আরও গভীরভাবে আলোচনা করব। সুবিধাভোগী একজন ব্যক্তি হিসেবে, কঠিন পরিস্থিতিগুলো তাদের মোকাবেলা করতে হয় না। তারা নিজেদের জগতে থাকতে পারে। তবে সেই জগৎ থেকে বেরিয়ে এসে পৃথিবীর খারাপ দিকগুলো দেখা এবং তা সমাধান করার চেষ্টা করা—এটাই সাহসিকতার পরিচয়।
এই সিনেমা তৈরির অভিজ্ঞতাকে চু তার জীবনের অন্যতম সৃজনশীল এবং আনন্দদায়ক যাত্রা হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, “উইকেড”-এর মতো বিশাল একটি কাজ করার জন্য আগের সব অভিজ্ঞতা, শিল্পী এবং কলাকুশলীদের সঙ্গে কাজ করার প্রতিটি মুহূর্ত কাজে লেগেছে।
“উইকেড”-এর প্রথম পর্ব মুক্তি পাওয়ার পর দারুণ সাড়া ফেলেছিল। সিনেমাটি দুটি অস্কার, একটি গোল্ডেন গ্লোব এবং তিনটি ক্রিটিকস চয়েস মুভি অ্যাওয়ার্ড জিতে নেয়। দ্বিতীয় পর্বটি নভেম্বরে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
তথ্য সূত্র: পিপল