বৈবাহিক সম্পর্কের জটিলতা: স্বামীর সম্মান রক্ষায় স্ত্রীর লড়াই
সাম্প্রতিককালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ঘটনা বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, যেখানে এক নারীর স্বামীর প্রতি তার বড় ভাইয়ের আচরণ নিয়ে অসন্তুষ্টির বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ৪ বছর বয়সী এক নারীর অভিযোগ, তাঁর ৫৪ বছর বয়সী দেবর, যিনি ‘কেন’ নামেই পরিচিত, প্রায়ই তার ৪৯ বছর বয়সী স্বামীকে ছোট করে কথা বলেন এবং তাঁর সিদ্ধান্তগুলোর সমালোচনা করেন।
বিষয়টির সূত্রপাত হয় শাশুড়ির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে, যেখানে মালদ্বীপ ভ্রমণের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চলছিল।
অনুষ্ঠানে পারিবারিক আলোচনার এক পর্যায়ে ওই দম্পতি তাদের মালদ্বীপ ভ্রমণের পরিকল্পনার কথা জানালে কেন নামের ওই ব্যক্তি তার ছোট ভাইকে প্রশ্ন করেন, “এই ভ্রমণের ব্যবস্থা কে করেছে? নিশ্চয়ই তোমার বউ সব করেছে?”
বিষয়টি শুনে ওই নারী ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং কেনকে জানান যে, ভ্রমণের সমস্ত আয়োজন তাঁর স্বামীই করেছেন।
কিন্তু কেন তাঁর স্বামীকে বারবার প্রশ্ন করতে থাকেন, “পাসপোর্ট আপ-টু-ডেট তো? ভিসা লেগেছে নাকি?” এই সময়টাতে স্বামীর প্রতিটি কথার উত্তর শুনে কেন কিছুটা অবাক হয়ে যান এবং বলেন, “বাহ, ভালো ছেলে, বেশ গুছিয়েছিস তো!”
এরপর ওই নারী কেনের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন এবং তাঁকে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করেন যে, তাঁর স্বামীর সঙ্গে এমন আচরণ করা উচিত নয় এবং তাঁকে সম্মান জানানো উচিত।
কিন্তু কেন বিষয়টিকে ভালোভাবে নেননি।
তিনি প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, পরে উত্তেজিত হয়ে জানতে চান, “তুমি কে?”
এর পরেই সেখানে কথা কাটাকাটি শুরু হয় এবং জন্মদিনের পরিবেশ কিছুটা হলেও বিষণ্ণ হয়ে ওঠে।
ঘটনাটি নিয়ে পরিবারের অন্যদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
অনেকে মনে করেন, স্ত্রীর এভাবে স্বামীর হয়ে কথা বলাটা ঠিক হয়নি।
তাঁদের মতে, স্বামীর হয়ে কথা বলার পরিবর্তে বিষয়টি তাঁর স্বামীরই দেখা উচিত ছিল।
সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা চলতেই থাকে।
কেউ কেউ কেনের আচরণকে বাড়াবাড়ি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
তাঁদের মতে, কেনের এই ধরনের আচরণ সত্যিই দৃষ্টিকটু।
আবার অনেকে মনে করেন, স্ত্রীর এই পদক্ষেপ সঠিক ছিল, কারণ অনেক সময় এমন পরিস্থিতিতে পুরুষরা প্রতিবাদ করতে দ্বিধা বোধ করেন।
তবে, অনেকে আবার স্ত্রীর এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে বলেছেন, তিনি কার্যত তাঁর স্বামীর হয়ে কথা বলে, কেনের মতোই আচরণ করেছেন।
তাঁদের মতে, হয় স্বামীকে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে দেওয়া উচিত ছিল, নয়তো বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া উচিত ছিল।
এই ঘটনাটি আমাদের পারিবারিক সম্পর্কের একটি জটিল দিক তুলে ধরে।
বিশেষ করে, যেখানে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেকার সম্পর্ক, শ্বশুর-শাশুড়ি ও অন্যান্য আত্মীয়দের ভূমিকা এবং পারস্পরিক সম্মানবোধের বিষয়টি জড়িত।
অনেক পরিবারেই বয়স্কদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তবে তরুণ প্রজন্মের নিজস্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা এবং আত্মসম্মানবোধও এক্ষেত্রে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সূত্র: পিপল