আধুনিক যুগে সম্পর্কের ধারণাগুলো ক্রমশ বদলাচ্ছে, আর এর সাথে তাল মিলিয়ে বাড়ছে প্রযুক্তির ব্যবহার। স্মার্টফোন এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, এবং এর মাধ্যমে আমরা একে অপরের সাথে জুড়ে থাকি সবসময়।
সম্প্রতি, অনলাইনে একজন নারীর প্রশ্ন এই বিষয়টি নিয়েই নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি জানতে চেয়েছেন, স্বামীর লোকেশন শেয়ার করার আবদার কি তাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো সতর্ক সংকেত?
আলোচনার সূত্রপাত হয় একটি অনলাইন ফোরামে, যেখানে ওই নারী তার স্বামীর এই আবদার নিয়ে দ্বিধা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, স্বামী তার ফোনের লোকেশন জানতে চান, যাতে তিনি সবসময় তার নিরাপত্তা সম্পর্কে অবগত থাকতে পারেন।
স্বামীর যুক্তি, তিনি স্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত এবং তিনি কোথায় আছেন, সে সম্পর্কে জানতে চান। তবে স্ত্রীর মতে, এটি তার ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপের শামিল। তিনি মনে করেন, লোকেশন শেয়ার করা তার গোপনীয়তার অধিকারকে খর্ব করে।
এই বিষয়ে অনলাইন জগতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে মনে করেন, সঙ্গীর লোকেশন জানা সঙ্গত। তাদের মতে, এর মাধ্যমে একে অপরের প্রতি বিশ্বাস বাড়ে এবং জরুরি অবস্থায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
বিশেষ করে ব্যস্ত জীবনে, কোথায় কার কী কাজ চলছে, তা জানার ক্ষেত্রে এই ধরনের প্রযুক্তি বেশ কাজে আসে। এছাড়া, অনেক দম্পতি তাদের দৈনন্দিন জীবনের নানা বিষয় শেয়ার করতে পছন্দ করেন।
অন্যদিকে, অনেকে স্ত্রীর উদ্বেগের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন। তাদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের কাছে তার লোকেশন জানতে চাওয়াটা অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করার মতো বিষয়। তাদের মতে, যদি স্ত্রী তার লোকেশন জানাতে রাজি না হন, তাহলে স্বামীর প্রতিক্রিয়া কেমন হয়, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।
সন্দেহজনক আচরণ সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে পারে। কারো কারো মতে, স্বামীকেও একইভাবে তার লোকেশন শেয়ার করতে রাজি থাকতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিটি সম্পর্কের নিজস্ব গতি থাকে। এখানে কোনো ‘সঠিক’ বা ‘ভুল’ নেই। কিছু দম্পতি সবসময় লোকেশন শেয়ার করেন, কারণ তাদের কাছে এটা প্রয়োজনীয় মনে হয়।
আবার কারো কারো ক্ষেত্রে এর প্রয়োজন হয় না। মূলত, সম্পর্কের ধরন এবং কেন লোকেশন শেয়ার করতে চাওয়া হচ্ছে, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। আপনার সঙ্গীর এই ধরনের আবদার আপনার কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য, সেই বিষয়টি নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ।
আপনারা কি মনে করেন, লোকেশন শেয়ার করা সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি স্বাভাবিক বিষয়, নাকি গোপনীয়তার ওপর হস্তক্ষেপ?
তথ্য সূত্র: People