আবহাওয়ার গুণাগুণ রক্ষা করা: দাবানলের ধোঁয়া থেকে বাঁচতে করণীয়।
বিশ্বজুড়ে দাবানলের কারণে সৃষ্ট ধোঁয়া অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা বাতাসের গুণমানকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফলে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে।
বাংলাদেশে সরাসরি দাবানলের ঘটনা তেমন না ঘটলেও, বায়ু দূষণ একটি গুরুতর সমস্যা। তাই আসুন জেনে নিই, কীভাবে এই ধরনের খারাপ বাতাস থেকে নিজেকে রক্ষা করা যায়।
বাতাসের গুণাগুণ বিচার করার কয়েকটি মাপকাঠি রয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের (EPA) এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (Air Quality Index – AQI) ব্যবহার করে বাতাসের মান মাপা হয়।
এই সূচকটি একটি নির্দিষ্ট এলাকার বাতাসের দূষণের মাত্রা প্রকাশ করে। এই ইনডেক্সের সংখ্যা যত কম, বাতাসের মান তত ভালো।
* ৫০ এর নিচে থাকলে বাতাসকে “স্বাস্থ্যকর” হিসেবে ধরা হয়।
* ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকলে “মাঝারি” মানের বাতাস।
* ১০০ থেকে ১৫০ পর্যন্ত হলে, “সংবেদনশীল গোষ্ঠীর” জন্য (যেমন – যাদের শ্বাসকষ্ট বা ফুসফুসের সমস্যা আছে) তা “অস্বাস্থ্যকর”।
* ১৫০ এর বেশি হলে সবার জন্যই “অস্বাস্থ্যকর”।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাদের শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের রোগ (সিওপিডি), বা হৃদরোগের মতো সমস্যা আছে, তাদের জন্য খারাপ বাতাস খুবই ক্ষতিকর।
খারাপ বাতাস থেকে বাঁচতে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে:
- ঘরের জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।
- এয়ার কন্ডিশনার (Air conditioner) চালু করুন এবং নিশ্চিত করুন যেন এটি ঘরের বাতাসকে পুনরায় সার্কুলেট করে।
- ঘরের ফাটলগুলো, যেমন – দরজার নিচের ফাঁকা অংশ, কাপড় বা অন্য কিছু দিয়ে বন্ধ করুন।
- ঘরের বাতাস পরিষ্কার করার জন্য এয়ার পিউরিফায়ার (Air purifier) ব্যবহার করতে পারেন। বিশেষ করে যে ঘরে আপনি বেশি সময় কাটান, সেখানে এটি রাখা ভালো.
- ঘরের এয়ার কন্ডিশনারের ফিল্টার নিয়মিত পরিবর্তন করুন। MERV 13 ফিল্টার ব্যবহার করা যেতে পারে, যা বাতাসের ক্ষুদ্র কণা ছেঁকে তুলতে সহায়ক।
যদি বাইরে যেতেই হয়, তাহলে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে পারেন:
- N95 মাস্ক (N95 mask) ব্যবহার করুন। এটি বাতাসের ক্ষতিকর কণা থেকে আপনাকে রক্ষা করবে। বর্তমানে, বাংলাদেশের অনেক দোকানেই এই মাস্ক পাওয়া যায়।
- বাইরে যাওয়ার সময় শ্বাসকষ্ট বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা হলে, দ্রুত কাছাকাছি কোনো ভালো বাতাসের জায়গায় যান।
মনে রাখবেন, ঢাকার মতো শহরে বায়ু দূষণ একটি নিয়মিত সমস্যা। তাই, এই পরামর্শগুলো শুধু দাবানলের ধোঁয়ার ক্ষেত্রেই নয়, বরং সাধারণ বায়ু দূষণ থেকে বাঁচতেও কাজে লাগবে।
নিয়মিতভাবে বাতাসের মান পর্যবেক্ষণ করুন এবং আপনার স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস