ছবিতে দেখুন: উইলিয়ামসবার্গের অজানা জগৎ!

ঐতিহাসিক স্থান এবং আকর্ষণীয় দৃশ্যের সমাহার: ভার্জিনিয়ার উইলিয়ামসবার্গ ও ঐতিহাসিক ত্রিভুজ।

ইতিহাস সবসময়ই মানুষকে আকর্ষণ করে। পুরোনো দিনের গল্প, সংস্কৃতি আর স্থাপত্যের টানে মানুষ ছুটে যায় বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন স্থানে।

ভার্জিনিয়ার উইলিয়ামসবার্গ এবং এর আশেপাশে অবস্থিত ঐতিহাসিক ত্রিভুজ তেমনই একটি জায়গা, যা ভ্রমণকারীদের মন জয় করে। এখানে গেলে আমেরিকার ঔপনিবেশিক যুগ এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের সাক্ষী হওয়া যায়।

উইলিয়ামসবার্গে গেলে প্রথমে চোখে পড়ে এখানকার পুরনো দিনের স্থাপত্যশৈলী। অষ্টাদশ শতকের জীবনযাত্রা এখনো এখানে জীবন্ত।

পুরোনো দিনের পোশাক পরা মানুষজন, ঘোড়ার গাড়ি, কামারের কাজ—সবকিছু যেন ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে আসা। এখানকার ‘ফিফ অ্যান্ড ড্রামস কর্পস’ সেই সময়ের সামরিক জীবনের ছন্দ ফুটিয়ে তোলে, যা দর্শকদের মুগ্ধ করে।

ঐতিহাসিক এলাকার কাছেই রয়েছে গভর্নরস প্যালেস। এককালে এটি ছিল সাতজন রাজকীয় গভর্নর এবং ভার্জিনিয়ার প্রথম দুই নির্বাচিত গভর্নরের বাসভবন।

বর্তমানে এটি দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত, যেখানে তারা গভর্নরদের জীবনযাত্রা এবং তাদের অধীনে কাজ করা কর্মচারীদের সম্পর্কে জানতে পারে।

প্যালেসের পেছনের বক্সউড হেজ মেজ এখানকার অন্যতম আকর্ষণ, যা ১৯৩০ সালে তৈরি করা হয়েছিল।

উইলিয়াম ও মেরি কলেজ-এর ক্যাম্পাসও একটি বিশেষ স্থান। এখানকার রেন বিল্ডিং আমেরিকার প্রাচীনতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম, যা দেশের বুদ্ধিবৃত্তিক ঐতিহ্যের প্রতীক।

কাছেই রয়েছে ক্রিম ডেল ব্রিজ, যা একটি শান্ত পুকুরের উপর দিয়ে গেছে। এই স্থানটি দর্শকদের জন্য এক শান্ত ও মনোরম পরিবেশ তৈরি করে।

ঐতিহাসিক জামেস্টাউনে গেলে ইতিহাস যেন চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে ওঠে। প্রত্নতত্ত্ববিদরা এখানে খনন করে ১৬০৭ সালের পুরনো দুর্গ খুঁজে বের করেছেন।

এছাড়া, এখানে পুরনো দিনের কারিগরদের হাতে তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র দেখা যায়, যা ঔপনিবেশিক যুগের জীবনযাত্রা সম্পর্কে ধারণা দেয়।

জামেস্টাউন বিচ-এ নদীর সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করা যায়, যেখানে কায়াকিং, প্যাডেলবোর্ডিং এবং মাছ ধরারও সুযোগ রয়েছে।

ঐতিহাসিক স্থানগুলোর বাইরেও এখানে প্রকৃতির নীরবতা উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে।

ফ্রিডম পার্ক-এ আমেরিকার প্রথম মুক্ত কৃষ্ণাঙ্গ বসতি, স্বাধীনতা যুদ্ধের স্থান এবং সপ্তদশ শতাব্দীর একটি বসতবাড়ির ধ্বংসাবশেষ বিদ্যমান। এছাড়া, এখানে বাইক রাইড করারও ব্যবস্থা রয়েছে।

এরপর আপনি যেতে পারেন ইয়র্কটাউন যুদ্ধক্ষেত্রে, যেখানে আমেরিকান ও ফরাসি বাহিনী স্বাধীনতা যুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছিল।

এখানে অবস্থিত আমেরিকান রেভোলিউশন মিউজিয়াম দর্শকদের স্বাধীনতা সংগ্রামের গল্প জানায়।

ইয়র্কটাউন নদীর তীরে অবস্থিত রিভারওয়াক ল্যান্ডিং-এ স্থানীয় দোকান, রেস্টুরেন্ট ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া যায়।

কাছেই রয়েছে ইয়র্কটাউন ভিক্টরি মনুমেন্ট, যা আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয়কে স্মরণ করে।

যারা প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য ওয়ালার মিল পার্ক একটি আদর্শ স্থান।

এখানে হাইকিং ট্রেইল, বোটিং এবং মাছ ধরার জন্য একটি জলাধার রয়েছে।

দিনের শেষে উইলিয়ামসবার্গ ওয়াইনারিতে বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ রয়েছে, যেখানে আঙুর বাগান, পুরস্কারপ্রাপ্ত ওয়াইন এবং স্থানীয় খাবার পাওয়া যায়।

উইলিয়ামসবার্গ এবং এর আশেপাশে, ইতিহাস, সংস্কৃতি আর প্রকৃতির এক দারুণ মেলবন্ধন দেখা যায়। যারা ইতিহাসের সাক্ষী হতে চান এবং একইসঙ্গে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য এই স্থানটি একটি আদর্শ গন্তব্য হতে পারে।

তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *