নিউ ইয়র্কের বেসমেন্টে: মহাকাশ ভাবুক উইলি লে’র কঙ্কাল!

মহাকাশ ভ্রমণের স্বপ্নদ্রষ্টা উইলি লেইয়ের দেহাবশেষ, ৫০ বছর পর নিউইয়র্কের একটি বাড়ির বেসমেন্টে!

বিগত কয়েক দশক ধরে মানুষ চাঁদে পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন দেখেছে। সেই স্বপ্নের কারিগরদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন জার্মান-মার্কিন লেখক উইলি লেই।

যিনি শুধু একজন লেখকই ছিলেন না, বরং ছিলেন মহাকাশ বিষয়ক একজন স্বপ্নদ্রষ্টা। ১৯৬৯ সালে ৬২ বছর বয়সে তাঁর প্রয়াণ হয়।

আর তাঁর মৃত্যুর এত বছর পর, নিউইয়র্ক সিটির একটি অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ের বেসমেন্ট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তাঁর দেহাবশেষ।

উইলি লেইয়ের কফিনবন্দী দেহাবশেষ খুঁজে পাওয়ার এই ঘটনাটি ঘটেছে ম্যানহাটনের আপার ওয়েস্ট সাইডের একটি কো-অপারেটিভ বিল্ডিংয়ে। বিল্ডিংটির তত্ত্বাবধায়ক মাইকেল হার্ডলোভিক, যিনি দীর্ঘদিন ধরে এখানে কাজ করছেন।

তিনিই ২০১৯ সালে একটি বেসমেন্ট পরিষ্কার করার সময় “উইলি লেইয়ের দেহাবশেষ” লেখা একটি কৌটা খুঁজে পান। কৌটাটি পাওয়ার পরে তিনি বিষয়টি কো-অপারেটিভ বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ডন নাদোর কাছে জানান।

এরপর নাদো জানার চেষ্টা করেন, এই মানুষটি কে ছিলেন এবং তাঁর পরিবারের কেউ আছেন কিনা।

ডন নাদো জানান, “আমরা মৃত ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে চেয়েছিলাম।” এরপর তিনি গুগলে অনুসন্ধান চালান এবং স্থানীয় একটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া কেন্দ্র ও কয়েকটি শ্মশানে ফোন করেন।

অনুসন্ধানের মাধ্যমে জানা যায়, কৌটার ভেতরে থাকা দেহাবশেষ আসলে জার্মানিতে জন্ম নেওয়া উইলি লেইয়ের। যিনি একসময় কুইন্সের জ্যাকসন হাইটস-এ বসবাস করতেন।

যদিও এই বিল্ডিংয়ের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক ছিল না।

উইলি লেই মহাকাশ ভ্রমণের উপর অসংখ্য বই ও প্রবন্ধ লিখেছেন। রকেট এবং মহাকাশ বিমানের ধারণা বিস্তারে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।

তাঁর কোনো নিকটাত্মীয় না থাকায়, তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করার দায়িত্ব বর্তায় ডন নাদোর উপর। নাদো জানান, “আমি ভেবেছিলাম, তিনি এখানে কীভাবে এলেন, তা হয়তো আমরা কোনোদিন জানতে পারব না, তবে নিশ্চিত করতে পারি, তাঁর শেষ ঠিকানা যেন সঠিক হয়।”

উইলি লেইয়ের জীবন ও কর্ম নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে নাদো জানতে পারেন, মানুষ চাঁদে যাবে—এই ভবিষ্যদ্বাণী করে যাওয়ার মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরেই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

ঘটনাচক্রে, এর কয়েক সপ্তাহ পরেই মানুষ প্রথম চাঁদে পা রাখে। তাই নাদোর স্বপ্ন, উইলি লেইকে মহাকাশে পাঠানো।

বর্তমানে তিনি বিভিন্ন প্রাইভেট স্পেস ফ্লাইট কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, যাতে লেইয়ের চিতাভস্ম চাঁদে পাঠানো যায়। তবে খরচ বেশি হওয়ায় বিষয়টি এখনো পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি।

ইতিমধ্যে উইলি লেইয়ের দেহাবশেষ তত্ত্বাবধায়কের অফিসেই রাখা আছে। হার্ডলোভিক জানিয়েছেন, “আমি এই মানুষটির জীবন সম্পর্কে চিন্তা করি।

তিনি কে ছিলেন বা কী অর্জন করেছেন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। আর এখন তিনি এই কৌটার মধ্যে।”

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *