উইসকনসিনের একটি আদালতের বিচারক সম্প্রতি বিতর্কিত এক রায়ে জানিয়েছেন, বিলিয়নেয়ার ইলন মাস্ককে রাজ্যের ভোটারদের অর্থ দেওয়ার পরিকল্পনা থেকে বিরত করা যাবে না। মাস্ক এই অঙ্গরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনের আগে দুজন ভোটারের প্রত্যেককে ১০ লক্ষ ডলার করে দিতে চেয়েছিলেন।
তবে, রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন, কারণ তাঁর মতে, এই অর্থ প্রদান রাজ্যের আইনের পরিপন্থী।
শনিবারের এই রায় আসে, যখন মাস্ক উইসকনসিনের গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনে গভীর ভাবে জড়িয়ে পড়েছেন। বিচারক ব্র্যাড শিমেলের সমর্থনে মাস্ক এবং তাঁর সহযোগী সংগঠনগুলি ইতিমধ্যে কয়েক কোটি ডলার খরচ করেছেন।
ডেমোক্র্যাট দল সমর্থন জানাচ্ছে ডেন কাউন্টি বিচারক সুসান ক্রফোর্ডকে। এই নির্বাচন কার্যত সুপ্রিম কোর্টের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে যাবে, সেই ফয়সালা করবে, যা রাজ্যের ভবিষ্যৎ নীতি নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
ইলন মাস্ক পরিকল্পনা করছেন, রবিবার একটি র্যালি করে সেখানকার ভোটারদের মধ্যে থেকে দুজনকে বেছে নিয়ে তাঁদের প্রত্যেককে ১০ লক্ষ ডলার করে দেবেন। একইসঙ্গে, তিনি অনলাইনে একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করার জন্য প্রত্যেককে ১০০ ডলার করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন।
এই পিটিশনে ‘অ্যাক্টিভিস্ট’ বিচারকদের বিরুদ্ধে কথা বলা হয়েছে। এর আগে তিনি গ্রিন বে-র এক ব্যক্তিকে ১০ লক্ষ ডলার দিয়েছিলেন পিটিশনে সই করার জন্য।
উইসকনসিনের অ্যাটর্নি জেনারেল, ডেমোক্র্যাট জশ কল, শুক্রবার মাস্কের ‘আমেরিকা প্যাক’-এর মাধ্যমে অর্থ প্রদানের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে মামলা করেছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, এর মাধ্যমে রাজ্যের এমন একটি আইন লঙ্ঘন করা হচ্ছে, যেখানে ভোটের বিনিময়ে ভোটারদের কিছু দেওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে কল বলেছেন, তিনি রাজ্যের আপিল আদালতে যাবেন। উল্লেখ্য, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেও মাস্ক একই ধরনের কৌশল নিয়েছিলেন।
সে সময় তিনি উইসকনসিনসহ আরও ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে ভোটারদের প্রথম ও দ্বিতীয় সংশোধনী সমর্থন করার জন্য একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করতে রাজি করিয়ে দৈনিক ১০ লক্ষ ডলার দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন।
উইসকনসিন সুপ্রিম কোর্টের এই নির্বাচন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই আদালত গর্ভপাতের অধিকার, কংগ্রেসনাল পুনর্গঠন, শ্রমিক ইউনিয়নের ক্ষমতা এবং ভোট দেওয়ার নিয়ম-কানুন সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে, যা ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচন এবং ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে।
ইলন মাস্ক তাঁর সামাজিক মাধ্যম ‘এক্স’-এ প্রথমে ঘোষণা করেছিলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে দুজন ভোটারকে ২০ লক্ষ ডলার দিতে চান, যাঁরা ইতিমধ্যেই নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল কল আদালতের কাছে আবেদন করেছিলেন, মাস্ককে এই ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করতে এবং উইসকনসিনের ভোটারদের ভবিষ্যতে কোনো প্রকার অর্থ প্রদান করা থেকে বিরত রাখতে।
যদিও মাস্কের সেই পোস্টটি পরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, কল তাঁর মামলায় যুক্তি দেখিয়েছেন, অর্থ প্রদানের বিষয়টি এখনো বাতিল করা হয়নি।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস