মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন কর্মকর্তাদের সাহায্য করতে অস্বীকার করায় উইসকনসিনের এক বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। মিলওয়াকি কাউন্টি সার্কিট আদালতের বিচারক হান্না ডুগানকে একজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার এড়াতে সাহায্য করা এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ফেডারেল আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল তার।
অভিযোগ অনুযায়ী, গত ১৮ এপ্রিল বিচারক ডুগান আদালতে শুনানির সময় জানতে পারেন যে, অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগকারী সংস্থা (ICE) – (সংক্ষেপে আইসিই), যা যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তার ও বহিষ্কারের জন্য দায়বদ্ধ, তারা আদালতে এসেছেন এডুয়ার্ডো ফ্লোরেস-রুইজকে গ্রেফতার করতে।
কারণ, ফ্লোরেস-রুইজ অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন। বিচারক ডুগান তখন ফ্লোরেস-রুইজ ও তার আইনজীবীকে একটি গোপন দরজা দিয়ে আদালত কক্ষ থেকে বের করে দেন।
এর ফলে, আইসিই কর্মকর্তারা তাকে গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হন।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, ফ্লোরেস-রুইজকে ২০১৩ সালে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। এরপর তিনি অবৈধভাবে আবার যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন।
স্থানীয় আদালতের রেকর্ড অনুযায়ী, মার্চ মাসে মিলওয়াকি কাউন্টিতে তার বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য নির্যাতনের তিনটি অভিযোগ আনা হয়। ঘটনার দিন, ১৮ এপ্রিল, তিনি বিচারক ডুগানের আদালতে শুনানিতে ছিলেন।
আদালতের নথিপত্র থেকে জানা যায়, বিচারক ডুগানকে তার ক্লার্ক জানান যে, আইসিই কর্মকর্তারা সম্ভবত আদালতের করিডোরে অবস্থান করছেন। এর পরেই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং এই পরিস্থিতিকে ‘হাস্যকর’ বলে মন্তব্য করেন।
এরপর তিনি এজলাস ত্যাগ করে তার চেম্বারে যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ডুগান ও অন্য একজন বিচারক কর্মকর্তাদের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেন।
পরে, ডুগান ফ্লোরেস-রুইজ ও তার আইনজীবীকে সাধারণত কর্মচারী, বিচারক এবং বন্দী আসামিদের জন্য ব্যবহৃত একটি দরজা দিয়ে দ্রুত বের করে দেন। যদিও ফ্লোরেস-রুইজকে স্বাক্ষর বন্ডের মাধ্যমে জামিন দেওয়া হয়েছিল, তবে আদালত প্রাঙ্গণের বাইরে যাওয়ার পর ফেডারেল এজেন্টরা তাকে ধরে ফেলে।
বিচার বিভাগের এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে ডেমোক্র্যাট ও ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। উইসকনসিন সুপ্রিম কোর্ট ইতোমধ্যে বিচারক ডুগানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।
সাবেক ফেডারেল প্রসিকিউটর জন ভাউডরুইল বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন ডুগানকে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাইছে। তার মতে, প্রসিকিউটররা সম্ভবত অভিযোগ কমানোর কোনো চুক্তিতে আসবেন না।
কারণ, তারা মনে করেন অভিবাসন নীতি নিয়ে মানুষ খুবই সংবেদনশীল। ডুগানের আইনজীবীরা সম্ভবত এই মামলাটি জুরি বিচারের দিকে নিয়ে যেতে চাইবেন।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস