উইসকনসিন সুপ্রিম কোর্টের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে যাবে, তা নির্ধারণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনকে ঘিরে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে ব্যাপক আলোচনা, কারণ এর ফল যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যের ভবিষ্যৎ নীতি নির্ধারণে প্রভাব ফেলতে পারে।
আসন্ন নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থিত প্রার্থী এবং ডেমোক্রেটদের সমর্থনপুষ্ট প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের এই নির্বাচনটি শুধু একটি রাজ্যের বিচার বিভাগের প্রধান নির্বাচন নয়, বরং এটি জাতীয় রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কারণ, এই আদালতের ক্ষমতা রয়েছে রাজ্যের নির্বাচন সংক্রান্ত আইন তৈরি করা এবং ভবিষ্যতে নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কোনো ধরনের বিতর্ক দেখা দিলে তার মীমাংসা করার। ফলে, এই নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণ করবে আদালত কোন দিকে ঝুঁকবে – রক্ষণশীল, নাকি উদারপন্থী নীতির দিকে।
নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রভাবশালী ব্যক্তি, যেমন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক, ব্র্যাড স্কিমেলের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, ডেমোক্রেট দলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং বিশিষ্ট সমাজসেবী জর্জ সরোস সমর্থন করছেন সুসান ক্রফোর্ডকে।
সুসান ক্রফোর্ড ডেন কাউন্টির বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বিভিন্ন সময়ে শ্রমিক ইউনিয়ন ও গর্ভপাতের অধিকার রক্ষার জন্য আইনি লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
এই নির্বাচনের প্রচারণায় বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হয়েছে, যা নজিরবিহীন।
ধারণা করা হচ্ছে, ব্যয়ের পরিমাণ ৯০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ইলন মাস্কের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গোষ্ঠী এই নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি অর্থ বিনিয়োগ করেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রও স্কিমেলের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এত বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের কারণ হলো, উভয় পক্ষই এই নির্বাচনের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পেরেছে।
নির্বাচনে জয়ী প্রার্থী সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে অন্তত দশ বছর দায়িত্ব পালন করবেন।
এই সময়ের মধ্যে আদালত গর্ভপাত, শ্রমিক অধিকার, নির্বাচনের নিয়মকানুন এবং রাজ্যের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ওপর সিদ্ধান্ত নেবে।
ফলে, এই নির্বাচনের ফলাফল শুধু উইসকনসিনের জন্যই নয়, বরং জাতীয় পর্যায়েও সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নির্বাচনের ফল নির্ধারণ করবে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কোন দিকে মোড় নেয়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস