বিশ্ব ক্রিকেটে বর্ষসেরা ক্রিকেটারদের পুরষ্কার বিতরণের পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) ব্যবস্থাপনায় বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (World Test Championship – WTC) নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছে উইজডেন ক্রিকেট বিষয়ক বর্ষগ্রন্থ। ক্রিকেটের বাইবেল হিসেবে পরিচিত এই প্রকাশনাটি আসন্ন ২০২৩-২৫ চক্রের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
জিম্বাবুয়েতে অনুষ্ঠিত আইসিসির বৈঠকে এই বিষয়ে আলোচনা হলেও, এখনো পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
উইজডেনের সম্পাদক লরেন্স বুথ তার নিবন্ধে বর্তমান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের কাঠামোকে ‘বিশৃঙ্খল’ আখ্যা দিয়ে একে ঢেলে সাজানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি এই প্রতিযোগিতার চার বছর মেয়াদী কাঠামো তৈরি করার প্রস্তাব করেন, যেখানে সব দল একে অপরের সাথে হোম এবং অ্যাওয়ে ভিত্তিতে খেলবে।
বুথের মতে, এই পদ্ধতিতে অন্তত তিনটি টেস্ট ম্যাচের একটি সিরিজ আয়োজন করতে হবে।
উইজডেনের এই সমালোচনার কারণ হলো, বর্তমান চ্যাম্পিয়নশিপের কাঠামো অনেক দলের জন্য সুবিধা-অসুবিধা তৈরি করে। উদাহরণস্বরূপ, আসন্ন ফাইনালের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা দলটিকে বিবেচনা করা হচ্ছে, যারা তুলনামূলকভাবে কম সংখ্যক টেস্ট ম্যাচ খেলেছে।
বুথের মতে, আইসিসিকে অবিলম্বে এই চ্যাম্পিয়নশিপের দুর্বলতাগুলো দূর করতে হবে।
তবে, এই সংস্কারের পথে একটি বড় বাধা হলো ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেকার রাজনৈতিক সম্পর্ক। দেশ দুটির মধ্যেকার বৈরিতার কারণে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজন করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের অংশগ্রহণ এই বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে তোলে। লরেন্স বুথ মনে করেন, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) প্রভাবশালী অবস্থান এবং জয় শাহের আইসিসি চেয়ারম্যান পদে আসীন হওয়া, ক্রিকেটের প্রশাসনিক কাঠামোকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
উইজডেনে প্রকাশিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলোর মধ্যে রয়েছে, প্রয়াত ইংলিশ ক্রিকেটার গ্রাহাম থর্পের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি। সাবেক এই ক্রিকেটারের স্ত্রী অ্যামান্ডা থর্প, তার স্বামীর মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সংগ্রামের কথা তুলে ধরেছেন।
এছাড়া, উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার বিজয়ীদের নামও ঘোষণা করা হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছেন- জ্যামি স্মিথ,গাস অ্যাটকিনসন, ড্যান ওরাল, এবং সোফি একলেস্টোন।
পুরুষদের মধ্যে বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জিতেছেন ভারতের তারকা পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ, এবং মেয়েদের বিভাগে এই খেতাব অর্জন করেছেন স্মৃতি মান্ধানা।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান