শিরোনাম: সঙ্গীর ১৮ বছর বয়সী মেয়ের ‘নিয়ন্ত্রণে’ অতিষ্ঠ নারী, সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন
একটি সম্পর্কে আবদ্ধ এক নারীর অভিযোগ, তার সঙ্গী তার ১৮ বছর বয়সী মেয়ের ইচ্ছের কাছে এতটাই নতিস্বীকার করেন যে তিনি নিজেকে ‘তৃতীয় ব্যক্তি’ হিসেবে অনুভব করেন। এই পরিস্থিতিতে তিনি ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে গভীর চিন্তায় পড়েছেন।
জানা গেছে, ওই নারী প্রায় তিন বছর ধরে তার সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। তারা আলাদা বাড়িতে থাকেন। তবে সম্প্রতি কিছু আর্থিক পরিবর্তনের কারণে, ওই নারী তার নিজের বাড়ি রক্ষণাবেক্ষণে সমস্যা অনুভব করছেন এবং সঙ্গীর সঙ্গে এক সঙ্গে থাকার কথা ভাবছেন।
কিন্তু তার মতে, এই পরিকল্পনায় প্রধান বাধা হলো তার সঙ্গীর ১৮ বছর বয়সী মেয়ে। মেয়েটি বর্তমানে মায়ের সঙ্গে থাকে, তবে সপ্তাহের বেশিরভাগ সময় বাবার কাছে কাটায়। সম্প্রতি বাবার কিছু অর্থ এসেছে এবং তিনি মেয়ের সঙ্গে থাকার জন্য একটি বড় বাড়ি কিনতে চাইছেন।
ওই নারীর ভাষ্যমতে, বাড়ি কেনার ক্ষেত্রেও মেয়ের মতামতই চূড়ান্ত। মেয়েটি তার বাবার জন্য পছন্দের বাড়ি খুঁজে বের করে এবং তার সঙ্গেই বাড়ি দেখতে যায়। এমনকি যদি বাবা কোনো বাড়ি পছন্দ করেন, আর মেয়ের অপছন্দ হয়, তাহলে সেই বাড়ির বিষয়টি সেখানেই শেষ হয়ে যায়।
ওই নারী আরও জানান, মেয়েটি তার বাবার বাজেট ৫০,০০০ পাউন্ড (প্রায় ৬৭ লক্ষ টাকার বেশি) বাড়ানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করছে, যাতে সে তার পছন্দের বাড়িটি কিনতে পারে।
শুধু বাড়ি কেনা নয়, মেয়ের পছন্দ-অপছন্দ, জীবনযাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রে যেন বাবার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। মেয়েটির পোশাক, গাড়ি, এমনকি কোথায় ঘুরতে যাওয়া হবে—সবকিছুতেই তার মতামত নেওয়া হয় এবং সে অনুযায়ীই সিদ্ধান্ত হয়।
ওই নারী আরও জানান, তার বাবা মেয়ের জন্য সবকিছু করেন—পোশাক, মেকআপ, এমনকি গাড়ির তেলের খরচ পর্যন্ত। মেয়েটির একটি আংশিক সময়ের কাজ (part-time job) আছে, তবুও তার সমস্ত খরচ বহন করেন বাবা।
বিষয়টি আরও খারাপের দিকে যায় যখন মেয়েটি তার বাবার সঙ্গে ওই নারীর সম্পর্কের মধ্যে নাক গলানো শুরু করে। ওই নারী জানান, “কখনও কখনও সে আমাকে দেখেই না। এমনকি আমরা দু’জনে বাইরে গেলে, সে বাবাকে জিজ্ঞেস করে কত খরচ হয়েছে! যেন সে চায় বাবা তার জন্য সব টাকা খরচ করুক, আমার জন্য কিছুই না।”
যখন তারা তিনজন একসঙ্গে বাইরে যান, তখন প্রায়ই দেখা যায়, ওই নারীর সঙ্গী ও তার মেয়ে হাত ধরে হাঁটে, আর তিনি তাদের পেছনে পড়েন। ছুটি কাটাতে গেলেও একই দৃশ্য দেখা যায়—বাবা মেয়ের সঙ্গে সময় কাটান, আর তিনি একপাশে একা বসে থাকেন।
বর্তমানে বাবা ও মেয়ে এক সঙ্গে থাকার জন্য বাড়ি কেনার পরিকল্পনা করছেন, তাই ওই নারী তার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তার প্রশ্ন, “যখন তারা তাদের বাড়ি কিনবে, তারা একসঙ্গে থাকবে, রান্না করবে, সবকিছু করবে। তাহলে আমার স্থান কোথায়? আমি কি সত্যিই এই সম্পর্কের অংশ?”
তিনি আরও বলেন, “আমি তো আর বেশি দিন নেই। এমন একটি সম্পর্কে সময় নষ্ট করতে চাই না, যেখানে কোনো ভবিষ্যৎ নেই। তিনি (সঙ্গী) বিষয়টি বুঝতে চান না এবং বলেন, মেয়ে যা চায় তাই হবে এবং সেই হিসেবে মেয়েই তার কাছে সব।”
বিষয়টি নিয়ে অনলাইনে আলোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই ওই নারীকে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের মতে, সঙ্গীর জীবনে মেয়ের এত বেশি প্রাধান্য, সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে আরও বেশি সমস্যার সৃষ্টি করবে।
অন্যদিকে, অনেকে মনে করেন, বাবার সঙ্গে মেয়ের এমন গভীর সম্পর্ক থাকাটা প্রশংসার যোগ্য। তাদের মতে, মেয়ের কাছে বাবা সবসময়ই প্রধান এবং এতে কোনো পরিবর্তন আসবে না। তাই ওই নারীর এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসা উচিত, যিনি এমন একজন সঙ্গীকে চান যিনি শুধুমাত্র তাঁর দিকেই মনোযোগ দেবেন।
তথ্যসূত্র: পিপল