যুক্তরাষ্ট্রের কলরাডোতে অভিবাসন বিষয়ক এক নারীর আটকের ঘটনা, প্রতিবাদমুখর ডেনভার।
ডেনভার, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের কলরাডো অঙ্গরাজ্যে অভিবাসন বিষয়ক একজন নারীর আটকের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। জ্যানেট ভিজগেরা নামের ওই নারী, যিনি অভিবাসন বিষয়ক কর্মী হিসেবে পরিচিত, ২০১৬ সালে তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসনের সময় বিতাড়ন এড়াতে গির্জায় আশ্রয় নিয়েছিলেন।
সোমবার (গতকাল) ডেনভার এলাকার একটি টার্গেট স্টোরে কাজ করার সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা গেছে, ভিজগেরা ২০০৯ সাল থেকে বিতাড়ন প্রতিরোধের চেষ্টা করছেন। তিনি মেক্সিকো সিটি থেকে ১৯৯৭ সালে কলরাডোতে আসেন।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি একটি জাল সোশ্যাল সিকিউরিটি কার্ড ব্যবহার করেছিলেন। যদিও ভিজগেরা সেই সময় জানতেন না যে কার্ডের নম্বরটি অন্য কারো।
তিনি ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিতাড়ন থেকে বাঁচতে গির্জায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। ২০২০ সালে তিনি গির্জা ত্যাগ করেন এবং এরপর থেকে তিনি একজন ভিসার জন্য আবেদন করছিলেন যা অপরাধের শিকার ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) বিভাগের হেফাজতে বর্তমানে তিনি বন্দী রয়েছেন।
আটকের পর, ডেনভারের মেয়র মাইক জনস্টন ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, “এটা দেশের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য অভিবাসন প্রয়োগ নয়, বরং রাজনৈতিক মতবিরোধীদের ওপর পুতিনের মতো নিপীড়ন।”
তিনি অবিলম্বে ভিজগেরার মুক্তি এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার দাবি জানান।
ভিজগেরার আটকের খবরে ডেনভারের কাছে অবস্থিত আইস ডিটেনশন সেন্টারের বাইরে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভকারীরা তার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেয়। তার পরিবার জানায়, আটকের পর তাকে সম্ভবত বিতাড়িত করার উদ্দেশ্যে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল, তবে পরে জানা যায় তিনি সেখানেই ছিলেন।
ভিজগেরার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, আইস-এর কাছে তাকে আটকের বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। তারা আদালতের কাছে এই আটকের বিরুদ্ধে আবেদন করেছেন।
আইনজীবীদের মতে, “আইনের প্রতি সম্মান না দেখিয়ে, কর্তৃপক্ষ যদি তাকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করে, তবে এটি আইনের শাসনের প্রতি চরম অবজ্ঞা প্রদর্শনের শামিল হবে।”
কলরাডোর এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন বিষয়ক বিতর্ককে আরও একবার সামনে নিয়ে এসেছে। বিশেষ করে, ট্রাম্প প্রশাসনের সময় অভিবাসন নীতি নিয়ে যে কঠোরতা ছিল, তা নিয়ে এখনো বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস