ঐতিহাসিক! ৩,৫০০ বছর আগের নারীর মুখ ফিরল!

প্রাচীন মাইসেনীয় যুগের এক নারীর মুখাবয়ব: ট্রয় যুদ্ধের আগের এক ঝলক।

আজ থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর আগে, ব্রোঞ্জ যুগে গ্রিসে বাস করা এক নারীর মুখাবয়ব নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিক খনন এবং আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় এই পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়েছে, যা আমাদের ট্রয় যুদ্ধের আগের এক জগতের সঙ্গে পরিচিত করে তোলে।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট মাইসেনি ছিল প্রাচীন গ্রিসের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য, যা হোমারের ‘ইলিয়ড’ এবং ‘ওডিসি’র মতো মহাকাব্যে বর্ণিত হয়েছে। এই রাজ্যের সঙ্গে হেলেন অব ট্রয় এবং ক্লিটেমনেস্ট্রার মতো কিংবদন্তী চরিত্রদের নাম জড়িয়ে আছে।

সম্প্রতি, এই অঞ্চলের একটি সমাধিতে পাওয়া নারীর মুখাবয়ব পুনর্গঠন করা হয়েছে, যা আমাদের সেই সময়ের মানুষের জীবনযাত্রা সম্পর্কে নতুন ধারণা দেয়।

পুনর্গঠন প্রক্রিয়া ঐতিহাসিক ড. এমিলি হাউজারের তত্ত্বাবধানে এই মুখাবয়ব তৈরি করা হয়েছে। ১৯৮০-এর দশকে তৈরি করা একটি মাটির মডেলের ওপর ভিত্তি করে ফরেনসিক অ্যানথ্রোপলজি এবং ডিএনএ বিশ্লেষণের মতো আধুনিক কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে।

এর ফলে, ব্রোঞ্জ যুগের এক নারীর আসল চেহারার একটি ধারণা পাওয়া যায়, যিনি সম্ভবত ৩০-এর কোঠায় ছিলেন।

গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার এই নারীর সমাধিতে একটি সোনার মুখা ও অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া গেছে। প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল যে এগুলো তাঁর স্বামীর, কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়, সমাধিস্থ ব্যক্তিটি আসলে তাঁর ভাই ছিলেন।

এই আবিষ্কার নারীদের সম্পর্কে প্রচলিত ধারণাগুলোকেও নতুনভাবে মূল্যায়ন করতে উৎসাহিত করে। প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ থেকে জানা যায়, ব্রোঞ্জ যুগে নারীরা কেবল গৃহিণীই ছিলেন না, বরং তাঁরা যোদ্ধা হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন।

স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রা পুনর্গঠিত মুখাবয়ব থেকে জানা যায়, ওই নারীর মেরুদণ্ড ও হাতে আর্থ্রাইটিসের সমস্যা ছিল। সম্ভবত, তিনি কাপড় বুননের মতো শারীরিক পরিশ্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

উপসংহার প্রাচীনকালের নারীদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে নতুন এই আবিষ্কার আমাদের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক উন্মোচন করে। এটি শুধু অতীতের প্রতিচ্ছবিই নয়, বরং সেই সময়ের মানুষের জীবন এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে আমাদের ধারণা আরও গভীর করতে সহায়ক।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *