সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে বিয়ের ছবি: বন্ধুত্বের মাঝে ফাটল?
সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে, আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত যেন ক্যামেরাবন্দী করতে ভালো লাগে। জন্মদিন থেকে শুরু করে বিয়ে—সবকিছুই এখন ছবি আর ভিডিওর মাধ্যমে বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হয়। আর এই ছবি শেয়ার করার প্রবণতা মাঝে মাঝে তৈরি করে অপ্রত্যাশিত কিছু সমস্যা।
সম্প্রতি, এমন একটি ঘটনার খবর পাওয়া গেছে, যেখানে একটি বিয়ের ছবি শেয়ার করা নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে তৈরি হয়েছে চরম মনোমালিন্য।
ঘটনাটি ঘটেছে, যখন এক নারী তার সবচেয়ে কাছের বন্ধুর বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে ছবি তোলার ব্যাপারে একটি বিশেষ নির্দেশনা ছিল—সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো ছবি শেয়ার করা যাবে না।
কিন্তু ওই নারী, সম্ভবত ভুল বুঝে, বিকেলের কিছু ছবি, যেখানে তিনি এবং তার বন্ধু ছিলেন, ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন।
এই ছবিগুলো পোস্ট করার পরেই কনে, অর্থাৎ তার বন্ধু, ভীষণভাবে ক্ষিপ্ত হন। তিনি তৎক্ষণাৎ ছবিগুলো সরিয়ে নিতে বলেন।
জানা যায়, কনে এতটাই upset ছিলেন যে, তিনি নাকি তার বন্ধুদের বলেছিলেন, ওই ছবি পোস্ট করার কারণে তার “বিশেষ মুহূর্ত” নষ্ট হয়ে গেছে। কারণ তিনি চেয়েছিলেন, পেশাদার ফটোগ্রাফারদের তোলা ছবিগুলোর মাধ্যমে তার সাজসজ্জা এবং বিয়ের অনুষ্ঠানের অন্য ছবিগুলো সবার সামনে আসুক।
বিষয়টি নিয়ে যখন ওই নারী তার বন্ধুর কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন, তখন বন্ধু জানান, তিনি এখনও খুবই upset এবং তার মনে হয়েছে ওই নারী তার ইচ্ছাকে সম্মান করেননি। এরপর থেকে তাদের মধ্যে আর কোনো কথা হয়নি।
এমনকি তিনি নাকি এটাও জানতে পেরেছেন যে, তার বন্ধু তাকে ক্ষমা করার কোনো চিন্তাভাবনা করছেন না।
এই ঘটনাটি নিয়ে অনলাইনে অনেকেই তাদের মতামত দিয়েছেন। Mumsnet নামক একটি ওয়েবসাইটে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়। সেখানে অনেকেই মনে করেন, কনে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন।
তাদের মতে, “বিয়ের কনে” (bride) তার নিজের গুরুত্ব প্রমাণ করতে গিয়ে এমনটা করছেন। আবার কেউ কেউ কনের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন, যারা মনে করেন, কনে তার বিশেষ দিনটিকে সবার কাছে সুন্দরভাবে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন, যা ছবি শেয়ার করার কারণে সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশেও বিয়ের ছবি ও ভিডিও শেয়ার করার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে, কনের সাজসজ্জা, অনুষ্ঠানের গোপনীয়তা রক্ষা করার জন্য ছবি শেয়ার না করার অনুরোধ করা হয়।
এমন পরিস্থিতিতে, বন্ধুদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি বা মনোমালিন্য হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।
এই ঘটনাটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে বন্ধুত্বের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হলে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে এবং অন্যের অনুভূতির প্রতি মনোযোগী হতে হবে।
বিশেষ করে, কোনো অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হলে, আয়োজকদের অনুরোধগুলো শোনা এবং তা মেনে চলা উচিত।
তথ্য সূত্র: পিপল