শিরোনাম: এক ছাদের নিচে প্রাক্তন ও বর্তমান: সন্তানের মঙ্গলের জন্য এক অভিনব পরিবার
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, যুক্তরাষ্ট্রের একটি পরিবার সমাজের চিরাচরিত ধারণাকে ভেঙে দিয়েছে। যেখানে একজন নারী, তার প্রাক্তন স্বামী এবং বর্তমান স্বামী – সবাই মিলেমিশে একই বাড়িতে বসবাস করছেন।
তাদের দুটি সন্তানও রয়েছে। এই পরিবারের গল্প এখন বিশ্বজুড়ে আলোচনার বিষয়।
মেগান নামের ওই নারীর প্রাক্তন স্বামী টাইলার এবং বর্তমান স্বামী মাইকেল। তাদের এই ঘর বাঁধার মূল মন্ত্র হলো – পারস্পরিক সম্মান, খোলাখুলি আলোচনা এবং সন্তানদের ভালো রাখা।
সম্পর্কগুলো যেন এক সুতোয় বাঁধা।
মেগান এবং মাইকেলের পরিচয় হয় ছোটবেলায়, চার্চে। এরপর তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে, যা একসময় ভালোবাসায় রূপ নেয়।
একসময় তাদের বিচ্ছেদ হলেও, জীবনের বাঁকে তারা আবার কাছাকাছি আসেন এবং বিয়ে করেন। এর মাঝে টাইলারের সঙ্গে মেগানের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
বিচ্ছেদের পর, মাইকেল যখন একটি চাকরির জন্য সাহায্য করেন, তখন তাদের সম্পর্ক আরও গভীর হয়। এরপর তারা জানতে পারেন যে মেগান মাইকেলের সন্তানের মা হতে চলেছেন।
এরপর তারা একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। তাদের জন্য সাউথ ক্যারোলাইনা শহরটি ছিল বসবাসের উপযুক্ত স্থান।
শুরুতে, মেগান দুই বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন, যাতে টাইলার এবং মাইকেল, তাদের সন্তানের কারণে মুখোমুখি না হন। কিন্তু পরিস্থিতি দ্রুত বদলায়।
একদিন, টাইলার যখন তাদের মেয়ের জন্য আসবাবপত্র বানাচ্ছিলেন, তখন মাইকেল সেখানে আসেন। প্রথমে মেগান ঘাবড়ে গেলেও, টাইলার পরিস্থিতি শান্ত করেন।
তিনি বুঝতে পারেন, তাদের একসঙ্গে থাকাই ভালো।
টাইলার বলেন, “আমি আমার মেয়ের জন্য সবকিছু করতে রাজি।” তিনি তার স্বপ্নের চাকরি পর্যন্ত ছেড়ে দেন, শুধু মেয়ের কাছাকাছি থাকার জন্য।
মাইকেলের কাছেও এই সম্পর্কটি ছিল অপ্রত্যাশিত। তিনি বলেন, “এটা অবশ্যই একটা রোলার কোস্টার রাইডের মতো।”
তাদের এই ভিন্ন ধরনের জীবনযাত্রা অনেকের কাছেই কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। তাদের বন্ধু এবং আত্মীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
অনেকে তাদের এই সিদ্ধান্তে অবাক হলেও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।
এই পরিবারের সদস্যরা তাদের দিনের বেশিরভাগ সময় একসঙ্গে কাটান। তাদের মধ্যে নিয়মিত আলোচনা হয় এবং তারা একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
তাদের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি হলো পারস্পরিক বোঝাপড়া। তারা মনে করেন, সন্তানদের জন্য হলেও, পুরনো মনোমালিন্য ভুলে যাওয়া উচিত।
তাদের মতে, ধৈর্য এবং ক্ষমা – এই দুটি গুণ তাদের সম্পর্ককে আরও মজবুত করেছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। অনেকে তাদের সম্পর্কের বিষয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেন।
তবে তারা এসব সমালোচনাকে তেমন গুরুত্ব দেন না।
ভবিষ্যতে, তারা একটি যৌথ বাসস্থান তৈরি করতে চান, যেখানে প্রত্যেকের জন্য আলাদা ঘর থাকবে, কিন্তু জায়গাটি হবে সবার জন্য উন্মুক্ত।
এই পরিবারের গল্প প্রমাণ করে, ভালোবাসার প্রকাশ শুধু একটি নির্দিষ্ট পথে সীমাবদ্ধ নয়।
সবার উপরে সন্তানের মঙ্গল-কামনা থাকলে, যেকোনো কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব।
তথ্য সূত্র: পিপল