ড্রিউ ব্যারিমোরকে আসল সত্যি জানালেন স্মৃতি হারানো এক নারী!

দৃষ্টিভঙ্গির এক অন্য গল্প, যেখানে স্মৃতি হয়ে ওঠে ক্ষণিকের অতিথি। সম্প্রতি, আমেরিকান অভিনেত্রী ড্রু ব্যারিমোরের জনপ্রিয় টক শো-তে এসেছিলেন নেস পিল্লাই নামের এক নারী।

তাঁর জীবনের গল্প শুনলে গা শিউরে ওঠে, কারণ তিনি এক বিরল স্মৃতিভ্রংশ রোগের শিকার। এই রোগের কারণে তিনি অল্প সময়ের মধ্যেই স্মৃতি হারিয়ে ফেলেন, অনেকটা যেন ‘50 First Dates’ সিনেমার গল্পের মতোই।

পিল্লাইয়ের স্মৃতি হারানোর এই যাত্রা শুরু হয়েছিল বেশ কয়েক বছর আগে, যখন মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন তিনি। এরপর ধীরে ধীরে তাঁর স্মৃতি দুর্বল হতে শুরু করে।

তিন বছর আগে, ঘুম থেকে ওঠার পর তিনি যখন তাঁর সঙ্গীকে চিনতে পারছিলেন না, তখনই আসল বিপদটা টের পান। তাঁর মনে হচ্ছিল, তিনি তাঁর মেয়ের পরিচর্যা করার যোগ্য নন।

চিকিৎসকেরা প্রথমে তাঁর এই সমস্যার কারণ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। তাঁদের ধারণা ছিল, হয়তো আগের কোনো আঘাতের ফলস্বরূপ এমনটা হচ্ছে। কিন্তু ধীরে ধীরে যখন তাঁর স্মৃতি আরও দ্রুত হারে লোপ পেতে শুরু করলো, তখন চিকিৎসকেরা বুঝতে পারলেন, এর গভীরে অন্য কিছু রয়েছে।

অবশেষে, এক নিউরো-সায়েন্টিস্টের সহায়তায় জানা যায়, পিল্লাইয়ের মস্তিষ্কের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এতে মস্তিষ্কের কোষগুলো ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাচ্ছে।

পিল্লাই তাঁর এই কঠিন জীবন নিয়ে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছেন, যার নাম ‘50,000 First Dates: A True Story’। ড্রু ব্যারিমোরের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, তাঁর এই ডকুমেন্টারির মূল উদ্দেশ্য প্রেম বা ভালোবাসার চিরাচরিত ধারণাকে ভেঙে দেওয়া।

এখানে পারিবারিক ভালোবাসা, বন্ধুত্বের সম্পর্ক, এবং আত্ম-ভালোবাসার মতো বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

নিজের এই পরিস্থিতির কথা বলতে গিয়ে পিল্লাই বলেন, “আমি হয়তো স্মৃতি ধরে রাখতে পারি না, তবে নতুন স্মৃতি তৈরি করতে পারি।” তিনি বর্তমানকে উপভোগ করতে চান এবং জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের জন্য কৃতজ্ঞ।

তাঁর এই কথাগুলো যেন এক গভীর আত্ম উপলব্ধির প্রতিচ্ছবি।

এই বিরল রোগ নিয়ে সচেতনতা তৈরি করা এবং এর সঙ্গে লড়াই করা মানুষদের প্রতি সহানুভূতি জানানোই এই লেখার মূল উদ্দেশ্য।

মানুষের জীবন যে কত বিচিত্র হতে পারে, পিল্লাইয়ের জীবন তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *