প্রেমের সম্পর্কে তিক্ততা: বাগদত্তার মন্তব্যের জেরে রান্নাবান্না বন্ধ করে দিলেন তরুণী।
সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘রেডিট’-এ (Reddit) এক তরুণীর অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা চলছে, যিনি তাঁর বাগদত্তার একটি মন্তব্যের পর গৃহকর্ম ও রান্নাবান্না বন্ধ করে দিয়েছেন। ঘটনাটি অনেকের মনেই নাড়া দিয়েছে এবং সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
জানা যায়, ২৬ বছর বয়সী ওই তরুণীর বাগদত্তা তাঁর পরিবারের সামনে এমন কিছু কথা বলেছিলেন যা শুনে তিনি আহত হন। মূলত, পারিবারিক এক ডিনারে তরুণীর স্বামীস্বরূপ ব্যক্তিটি মন্তব্য করেন যে, তাঁর বাগদত্তা নাকি সম্পর্কের ‘টেবিলে’ তেমন কিছুই ‘আনেন না’। এই মন্তব্যের পরেই ওই তরুণী প্রতিবাদস্বরূপ রান্নাবান্না ও অন্যান্য গৃহস্থালীর কাজ করা বন্ধ করে দেন।
রেডিটে দেওয়া ওই পোস্টে তরুণী জানান, তিনি সাধারণত বাড়ি থেকে কাজ করেন এবং বাড়ির অধিকাংশ কাজ তিনিই করেন। যদিও তাঁর বাগদত্তা একটি নির্দিষ্ট সময়ের (৯টা-৫টা) চাকরি করেন এবং তাঁর উপার্জন বেশি, তবুও তাঁরা খরচের হিসাব রাখেন – যেখানে তরুণী ৪০ শতাংশ এবং তাঁর বাগদত্তা ৬০ শতাংশ খরচ দেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় পারিবারিক এক ডিনারে। সেখানে তাঁর বাগদত্তার ভাই ঠাট্টা করে ‘ওয়াইফি ডিউটি’ (wifey duties) নিয়ে কথা বলেন। এর উত্তরে তাঁর বাগদত্তা বলেন, “আসলে এখনও তো সেভাবে কিছুই ‘আনছে না’।” তরুণীর শ্বশুরমশাই হেসে ওঠেন এবং শাশুড়ি সহানুভূতি নিয়ে তাঁর দিকে তাকান।
এই ঘটনার পর তরুণী ভেতরে ভেতরে ক্ষোভ পুষে রাখেন। বাড়ি ফেরার পর তিনি কোনো কথা বলেননি, কিন্তু এর প্রতিবাদস্বরূপ তিনি রান্না করা বন্ধ করে দেন। তিনি জানান, “আমি যখন অনুভব করলাম যে, আমি এমন একটি টেবিলে কিছুই যোগ করছি না, তখন কেনই বা আমি সেখানে অবদান রাখব?”
তরুণীর এমন সিদ্ধান্তে তাঁর বাগদত্তা প্রথমে বেশ বিস্মিত হন এবং পরে বিষয়টি ‘ঠাট্টা’ হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এমনকি তিনি তরুণীকে ‘ম্যানিপুলেটিভ’ (manipulative) বলেও অভিহিত করেন। যদিও তরুণী এই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা না চাইলে তাঁর অবস্থানে অনড় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বর্তমানে, ওই তরুণী জানতে চেয়েছেন যে, তাঁর এই পদক্ষেপ ঠিক না ভুল। এই বিষয়ে জানতে চেয়ে তিনি রেডিটে পরামর্শ চেয়েছেন। এই ঘটনার পর, অনেকেই তাঁর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
একজন মন্তব্যকারী তাঁর অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে লিখেছেন, “যে পুরুষ তোমাকে সম্মান করে না, তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখা উচিত নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর ধারণা আরও খারাপ হবে।” অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “এমন পুরুষকে বিয়ে করা উচিত নয়, যিনি এ ধরনের কথা বলেন। তাঁর পরিবারও যদি এমন মানসিকতার হয়, তবে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা কঠিন।
এই ঘটনার জেরে, সম্পর্কের ভিত্তি এবং পারস্পরিক সম্মান নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, সম্পর্কের ক্ষেত্রে দু’জনেরই অবদান থাকা জরুরি। তবে, তরুণীর এই সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত কোন দিকে মোড় নেয়, এখন সেটাই দেখার বিষয়।
তথ্য সূত্র: পিপল