৫০০০ ডলার সঞ্চয়! একই পেশায় থেকেও মা-বাবার সঞ্চয় দেখে হতাশ?

শিরোনাম: জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়: বর্তমান প্রজন্মের সঞ্চয়ে হিমশিম, অতীতের সঙ্গে ফারাক

বর্তমান বিশ্বে জীবনযাত্রার ব্যয় যেভাবে বাড়ছে, তাতে অনেক পরিবারই আর্থিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। সম্প্রতি, যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী এক নারীর অভিজ্ঞতা সেই কঠিন বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি।

তিনি তার বাবা-মায়ের আর্থিক অবস্থার সঙ্গে নিজের পরিবারের তুলনা করে এক বিশাল ফারাক খুঁজে পেয়েছেন, যা তাকে রীতিমতো হতাশ করেছে।

ওই নারীর বাবা-মা তাদের জীবনে সামান্য কিছু পুঁজি নিয়ে শুরু করেছিলেন। মা ছিলেন স্কুলের ক্যান্টিনের কর্মী, আর বাবা শিক্ষকতা করতেন।

অথচ, তারা তাদের জীবনের চল্লিশের দশকেই বন্ধকী ঋণ (mortgage) পরিশোধ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, তারা নিয়মিতভাবে পরিবার নিয়ে বিভিন্ন স্থানে, এমনকি বিদেশ ভ্রমণেও যেতেন।

তাদের একটি লিজ করা (leased) গাড়ি ছিল, যা তারা প্রতি তিন বছর পর পর পরিবর্তন করতেন। তারা তাদের দুই মেয়ের বিয়ের খরচ এবং বাড়ির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থও জুগিয়েছিলেন।

অন্যদিকে, ওই নারী এবং তার স্বামী তুলনামূলকভাবে ভালো চাকরি করেন। তাদের একটি পুরোনো গাড়ি আছে এবং বছরে একবার দেশের ভেতরে ছুটি কাটান।

তাদের একটি সন্তান রয়েছে। তারা তাদের বন্ধকী ঋণ পরিশোধ করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, যা হয়তো তাদের অবসর গ্রহণের পরেই সম্ভব হবে।

কিন্তু তাদের সঞ্চয় দেখলে চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার মতো অবস্থা। তাদের হিসাব অনুযায়ী, তাদের বর্তমান সঞ্চয়ের পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬ লক্ষ টাকার কাছাকাছি।

এই নারী জানান, তারা মদ্যপান বা ধূমপান করেন না এবং দামি পোশাকও কেনেন না। তাদের জীবনযাত্রার ধরন তাদের বাবা-মায়ের মতোই, কিন্তু তাদের আর্থিক অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন।

তিনি উপলব্ধি করেন, গত ৪০ বছরে জীবনযাত্রার খরচ অনেক বেড়েছে।

বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা শুরু হলে অনেকেই তাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তাদের অনেকেরই অভিযোগ, তারা কঠোর পরিশ্রম ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করার পরেও তাদের বাবা-মায়ের মতো সঞ্চয় করতে পারছেন না।

জীবনযাত্রার উচ্চ খরচ তাদের সঞ্চয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে উন্নত শিক্ষা ও ভালো চাকরি করেও অনেকের পক্ষে সঞ্চয় করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এর প্রধান কারণ হলো, জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়।

বাড়ি নির্মাণ, সন্তানের পড়াশোনা, স্বাস্থ্যখাতে খরচ—সবকিছুই এখন অনেক বেশি ব্যয়বহুল।

বাংলাদেশেও একই চিত্র দেখা যায়। এখানেও তরুণ প্রজন্মের জন্য সঞ্চয় করা কঠিন হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে, ঢাকা ও চট্টগ্রাম-এর মতো বড় শহরে ফ্ল্যাট কেনা এবং জীবন ধারণের খরচ অনেক বেড়েছে।

ফলে, অনেক পরিবারকেই তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

সব মিলিয়ে, জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের কারণে আজকের দিনে সঞ্চয় করা আগের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজন আর্থিক পরিকল্পনা, সচেতনতা এবং সরকারি সহায়তা।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *