বিয়ে! থেরাপিস্টকে ফোন করে তরুণীর চাঞ্চল্যকর ঘোষণা

মনের কথা খুলে বলার নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল খুঁজে পাওয়াটা যেন এক কঠিন চাবিকাঠি খুঁজে পাওয়ার মতো – যা আপনাকে বহু বছর ধরে বুকের ভেতর চেপে রাখা অনুভূতিগুলো বাইরে আনতে সাহায্য করে।

সাবানা ডাটা নামের এক তরুণী, যিনি থেরাপিস্টের কাছে গিয়েছিলেন, তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া একটি বিশেষ ঘটনা সম্প্রতি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

সাবানা ডাটা যখন কিশোরী ছিলেন, তখন বেশ কয়েকজন থেরাপিস্টের সঙ্গে কথা বলার পর অবশেষে তিনি এমন একজনকে খুঁজে পান, যাঁর সঙ্গে তিনি মানসিক শান্তির ঠিকানা খুঁজে পেয়েছিলেন।

প্রায় চার বছর আগে, তিনি তাঁর সেই প্রিয় থেরাপিস্টকে খুঁজে পান।

এরপর কেটে গেছে অনেকগুলো বছর। সম্প্রতি, ২০ বছর বয়সী সাবানার বাগদান সম্পন্ন হয়েছে, আর এই খবরটি তিনি সবার আগে জানাতে চেয়েছিলেন তাঁর প্রিয় থেরাপিস্টকে।

সাবানা জানান, “আমার বাগদানের খবর থেরাপিস্টের সঙ্গে শেয়ার করাটা আমার জন্য খুব জরুরি ছিল।

কারণ, তিনি আমার জীবনের ভালো-খারাপ সব সময়েই পাশে ছিলেন।”

তিনি আরও বলেন, “আমার আত্ম-মর্যাদা খুঁজে পাওয়ার শুরুটা হয়েছিল তাঁর হাত ধরেই।

আমি সবসময় মনে করতাম, আমি হয়তো কারও যোগ্য নই।”

ভালোবাসা খুঁজে পাওয়া এবং বাগদানের অনেক আগে, কঠিন সময়ে সাবানার পাশে ছিলেন তাঁর থেরাপিস্ট।

সাবানা স্বীকার করেন, “আমি আমার সব কথা তাঁর সঙ্গে মন খুলে বলতে পারি।

তাঁর কাছে কোনো বিচার পাওয়ার ভয় নেই। এখন মনে হয়, আমি যেন আমার সেরা বন্ধুর সঙ্গেই কথা বলছি।”

দিনের পর দিন একসঙ্গে থাকার ফলে তাঁদের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে, যা সাবানাকে তাঁর মনের কথা বলার জন্য একটি নিরাপদ স্থান দিয়েছে।

তিনি জানান, “আমার ভেতরের আত্ম-মর্যাদাবোধ তৈরি করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল—অন্যেরা আমাকে কীভাবে দেখে, সে বিষয়ে নিজেকে প্রশ্ন করা।

আমি বিশ্বাস করি, সৃষ্টিকর্তা আমাকে মায়ের গর্ভে তৈরি করেছেন এবং একটি উদ্দেশ্য নিয়ে বাঁচতে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।”

থেরাপির মাধ্যমে সাবানা বুঝতে পেরেছিলেন, ভালোবাসার পেছনে ছুটে না গিয়ে বরং নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে।

তাঁর জীবনেও তেমনটাই ঘটেছে। ২০২২ সালে তিনি তাঁর হবু জীবনসঙ্গীর সঙ্গে পরিচিত হন।

এই কারণে, বাগদানের মতো আনন্দের খবরটি সবার আগে থেরাপিস্টকে জানানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

সাবানা সেই মুহূর্তের একটি ভিডিও তৈরি করেন এবং টিকটকে পোস্ট করেন, যা এরই মধ্যে ৪ লক্ষ ৩০ হাজারের বেশিবার দেখা হয়েছে।

সাবানা আরও জানান, “আমার থেরাপিস্ট আমার জন্য খুবই খুশি হয়েছিলেন।

তাঁর চোখে সেই আনন্দ দেখে, একসঙ্গে কাটানো দিনগুলোর কথা মনে পড়ে গেল। তিনি সবসময় আমার ভালো চেয়েছেন এবং প্রতিটি অভিজ্ঞতায় আমাকে সমর্থন করেছেন।”

থেরাপির মাধ্যমেই তিনি আজকের অবস্থানে পৌঁছেছেন।

থেরাপি তাঁকে শৈশবের আঘাত থেকে মুক্তি পেতে, নিজেকে ভালোবাসতে এবং মানসিক শান্তি খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে।

তিনি চান, অন্যরাও যেন এই অভিজ্ঞতা থেকে উপকৃত হয়।

সাবানা দৃঢ়ভাবে বলেন, “থেরাপি দুর্বল মানুষের জন্য—এমন ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।

থেরাপি সবার জন্য, প্রত্যেকেরই এমন একজন মানুষের প্রয়োজন, যাঁর সঙ্গে মন খুলে কথা বলা যায়। আমার থেরাপিস্ট না থাকলে, আমি হয়তো পরিস্থিতিগুলো সেভাবে সামলাতে পারতাম না।”

মানসিক স্বাস্থ্য এবং থেরাপি বিষয়ে সমাজে কিছু ভ্রান্ত ধারণা থাকতে পারে।

তবে, নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য পেশাদার সাহায্য নেওয়াটা দুর্বলতা নয়, বরং আত্ম-অনুভূতির পরিচর্যা।

পরিবার এবং বন্ধুদের সমর্থনও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।

তথ্যসূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *