মা-শাশুড়ির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যোগ না দেওয়ার কারণে স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য, অবশেষে আসন্ন মা দিবসেও আপোষ করতে নারাজ এক গৃহবধূ।
সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের এই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে অন্যদের সমর্থন চেয়েছেন তিনি।
ঘটনার সূত্রপাত হয় কয়েক মাস আগে, যখন শাশুড়ির জন্মদিন উপলক্ষে ঘরোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ওই গৃহবধূ জানান, তিনি সাধারণত পরিবারের সবার সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক রাখেন, তবে শাশুড়ির সঙ্গে তার সম্পর্কটা সব সময় একটু অন্যরকম থাকে।
জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেওয়ার পদ্ধতিতে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়।
গৃহবধূর ননদ (স্বামীর বোন) জানান, তিনি আনুষ্ঠানিক নিমন্ত্রণ পাননি, তাই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন না।
যদিও পরিবারের অন্য সদস্যদের মতো তিনিও একটি সাধারণ গ্রুপ চ্যাটে আমন্ত্রিত ছিলেন।
এরপর শাশুড়ি তাঁর ছেলের (গৃহবধূর স্বামী) উপর চাপ সৃষ্টি করেন, ননদকে ব্যক্তিগতভাবে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য।
কিন্তু স্বামী জানান, যেহেতু ননদ গ্রুপ চ্যাটে ছিলেন এবং অন্য কারো কাছে কোনো ‘আনুষ্ঠানিক’ আমন্ত্রণ যায়নি, তাই তাকে আলাদা করে ডাকার প্রয়োজন নেই।
জন্মদিনের দিন, গৃহবধূ একাই অধিকাংশ রান্নাবান্না ও অন্যান্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন।
কিন্তু তিনি হতাশ হয়ে পড়েন যখন শাশুড়ি অনুষ্ঠানে আসেননি।
তিনি পরে জানতে পারেন, শাশুড়ি নাকি অন্য এক ননদকে বলেছিলেন, যিনি তার একটি সন্তানকে (ওই ননদ) বাদ দেয়, তার সঙ্গে তিনি খাবার ভাগ করতে চান না।
অনুষ্ঠান শেষে, স্বামী তার মায়ের অনুপস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং গৃহবধূর কাজের প্রশংসা করেন।
কিন্তু এই ঘটনাটি গৃহবধূকে গভীরভাবে আঘাত করে।
তিনি জানান, কেন শাশুড়ি তার এত কষ্টের কথা বিবেচনা করলেন না।
এরপর তিনি স্বামীকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তারা ভবিষ্যতে শাশুড়ির জন্য কোনো অনুষ্ঠান আয়োজন করবেন না।
স্বামী প্রথমে রাজি হলেও, যখন মা দিবসের অনুষ্ঠানের প্রস্তাব আসে, তখন গৃহবধূ সরাসরি তা প্রত্যাখ্যান করেন।
তিনি জানান, ননদের আচরণ এখনো একই রকম রয়েছে এবং শাশুড়িও ক্ষমা চাননি।
তাই তিনি আর কোনো আপস করতে রাজি নন।
স্বামী তখন বোঝানোর চেষ্টা করেন যে মা দিবসটা ভিন্ন, কিন্তু গৃহবধূ তার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন।
তিনি জানান, শাশুড়িকে নিয়ে কোনো কিছুই তিনি আর করতে রাজি নন।
তিনি হয়তো বাইরে ডিনারে যেতে বা অন্য কারো বাড়িতে দোকান থেকে কেনা কিছু নিয়ে যেতে রাজি আছেন, কিন্তু শাশুড়ির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা রান্না করার মতো কষ্ট করতে আর রাজি নন।
এরপর স্বামী জানতে চান, এই নতুন নিয়ম কত দিন চলবে।
উত্তরে তিনি জানান, এটা স্থায়ী।
স্বামী তখন অভিযোগ করেন, তিনি হয়তো এখনো তার শাশুড়ির উপর রাগ পুষে রেখেছেন এবং পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছেন।
তবে অবশেষে তিনি মা দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজন করতে রাজি হননি, যদিও তার মনে হয়েছে, গৃহবধূ একটু বেশি বাড়াবাড়ি করছেন।
গৃহবধূর এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।
তাদের মতে, শাশুড়ি এবং ননদের আচরণ ‘অশোভন’ এবং ‘ছেলেমানুষি’।
একজন মন্তব্যকারী লিখেছেন, “শাশুড়ি যদি আসেন, তবে স্বামীরই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, বাজার করা এবং খাবারের প্রস্তুতিসহ সবকিছু করার দায়িত্ব নেওয়া উচিত।
এমন কারো জন্য কেন এত কষ্ট করতে হবে, যিনি এর মূল্যায়ন করেন না?”
তথ্য সূত্র: পিপল