নারীদের কি পুরুষের চেয়ে বেশি ঘুমের প্রয়োজন? স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি নতুন গবেষণা এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে। সাধারণত, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন।
তবে, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নারীদের ঘুমের ধরনে কিছু ভিন্নতা রয়েছে। এর কারণ হিসেবে তাদের শরীরে হরমোনের পরিবর্তনকে প্রধানত দায়ী করা হয়।
একটি সুস্থ জীবনের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। ঘুম আমাদের শরীরকে বিশ্রাম দেয়, যা শরীরকে পুনরায় সক্রিয় করতে সহায়তা করে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া, মেজাজ খারাপ হওয়া এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে।
নারী এবং পুরুষ উভয়ের জন্যই ঘুমের গুরুত্ব সমান, তবে নারীদের ঘুমের ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ দিক রয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, মহিলাদের জীবনে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে তাদের ঘুমের ধরনে ভিন্নতা দেখা যায়। ঋতুস্রাবের সময় অনেক নারী ঘুমের সমস্যা অনুভব করেন।
গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে ঘুমের ধরনে পরিবর্তন আসে, যা ঘুমকে ব্যাহত করতে পারে। মেনোপজের সময় হরমোনের তারতম্যের কারণে গরম লাগা এবং রাতের বেলা ঘাম হওয়ার মতো সমস্যা দেখা যায়, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
এছাড়াও, নারীদের মধ্যে ইনসোমনিয়ার (ঘুম না আসা) প্রবণতা পুরুষের তুলনায় বেশি। গবেষণায় দেখা গেছে, মহিলারা পুরুষের তুলনায় ঘুমের সমস্যায় বেশি ভোগেন, যেমন রেস্টলেস লেগ সিন্ড্রোম (Restless Leg Syndrome) বা অস্থির পা সিন্ড্রোম এবং স্লিপ অ্যাপনিয়া (ঘুমের মধ্যে শ্বাসকষ্ট)।
নতুন মায়েদের ক্ষেত্রেও ঘুমের অভাব একটি সাধারণ সমস্যা। সন্তান জন্মদানের পর মায়েদের ঘুমের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
বিভিন্ন বয়সের মানুষের জন্য ঘুমের চাহিদাও ভিন্ন। শিশুদের বেশি ঘুমের প্রয়োজন, যেখানে বয়স্কদের ঘুমের পরিমাণ কিছুটা কম হতে পারে।
সাধারণভাবে, প্রতিটি মানুষের বয়স অনুযায়ী পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন।
ঘুমের গুণগত মান উন্নত করতে কিছু সাধারণ টিপস অনুসরণ করা যেতে পারে। একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া ও ঘুম থেকে ওঠা, ঘুমের আগে ক্যাফিন ও অ্যালকোহল পরিহার করা, ঘুমানোর পরিবেশ শান্ত ও আরামদায়ক রাখা, এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করা ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক হতে পারে।
পরিশেষে, বলা যায় যে, নারী এবং পুরুষ উভয়ের জন্যই পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। তবে, নারীদের ক্ষেত্রে হরমোনের পরিবর্তন এবং সামাজিক কিছু কারণ তাদের ঘুমের ধরনে প্রভাব ফেলে।
তাই, নারীদের ঘুমের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। পর্যাপ্ত ঘুমের মাধ্যমে নারী-পুরুষ উভয়েই সুস্থ জীবন যাপন করতে পারেন।
তথ্যসূত্র: হেলথলাইন