বিখ্যাত ইংরেজ কবি উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থের বাসভবন রাইডাল মাউন্ট-কে রক্ষা করার জন্য এখন জোর প্রচার চলছে। লেক ডিস্ট্রিক্টে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক বাড়িটি বর্তমানে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা সাহিত্যপ্রেমীদের জন্য উদ্বেগের কারণ। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে এখানে পর্যটকদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
ওয়ার্ডসওয়ার্থ ১৮১৩ সাল থেকে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত এই বাড়িতে বসবাস করতেন। বাড়ির আশেপাশে কবির ডিজাইন করা বিশাল বাগান আজও বিদ্যমান। পরবর্তীতে, ১৯৬০-এর দশকে তাঁর বংশধররা বাড়িটি কেনেন এবং জনসাধারণের জন্য খুলে দেন।
তবে, কোভিড পরিস্থিতির পর থেকে এখানে দর্শক কমে যাওয়ায় বাড়িটি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যার দাম ২.৫ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি ধরা হয়েছে।
এই ঘোষণার পরেই, বাড়িটিকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে এসেছেন অনেকে। অভিনেতা ব্রায়ান কক্স, মিরিয়াম মার্গোলিস এবং টম কন্টি’র মতো খ্যাতিমান ব্যক্তিরা এই উদ্যোগে সমর্থন জুগিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন শিশুদের জন্য সাহিত্য রচয়িতা ফ্রাঙ্ক কট্রেল-বয়সও।
ওয়ার্ডসওয়ার্থের প্রপ্রৌত্রী শার্লট ওয়ন্টনার এই প্রচারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি চান, অনুদান সংগ্রহ করে বাড়িটি এবং বাগানটিকে জনসাধারণের জন্য খোলা রাখা হোক। তাঁর মতে, “আমরা প্রায়ই আমাদের অতীতের সঙ্গে সংযোগগুলো হারাচ্ছি, কিন্তু এই বাড়িটি সেই গুরুত্বপূর্ণ সংযোগগুলির মধ্যে একটি, যা আমরা হারাতে পারি না।”
মিরিয়াম মার্গোলিস বলেছেন, “রাইডাল মাউন্টের এই আসন্ন বিক্রি একটি ভুল সিদ্ধান্ত। এটি অবশ্যই বন্ধ করা যেতে পারে। এই অমূল্য সম্পদটি শুধুমাত্র উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থের নয়, বরং এটি আমাদের সকলের, অর্থাৎ জাতির সম্পদ।”
শার্লট ওয়ন্টনার, যিনি তাঁর ঠাকুরমার সূত্রে এই বাড়ির সঙ্গে যুক্ত, রাইডাল মাউন্টকে একটি “জীবন্ত জাদুঘর” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তাঁর মতে, “বাগানগুলো হলো সেই স্থান যেখানে ওয়ার্ডসওয়ার্থ তাঁর অনেক কবিতা লিখেছেন। এখানে এলে মানুষজন কবিতার আরও কাছাকাছি অনুভব করে।”
তিনি আরও যোগ করেন, প্রকৃতির প্রতি কবির গভীর ভালোবাসা এবং পরিবেশ সম্পর্কে তাঁর সচেতনতা আজও বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
বাড়িটি যিনি বিক্রি করছেন, সেই ক্রিস্টোফারও এই প্রচারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। শার্লট জানিয়েছেন, তাঁদের সকলের লক্ষ্য হলো বাড়িটিকে আগের মতোই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা। তিনি আরও আশা করেন, পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও এই বিষয়ে তাঁদের সমর্থন জানাবেন।
ওয়ার্ডসওয়ার্থের বাড়িটিকে প্রায়শই শান্তির আশ্রয়স্থল হিসেবে উল্লেখ করা হয়। আজকের অস্থির সময়ে, এমন একটি স্থান খুবই প্রয়োজনীয়। যেখানে মানুষ দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততা থেকে মুক্তি পেতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান