ফিটনেস রুটিন বদলানোর ৭টি লক্ষণ।
শারীরিক সুস্থতা এবং ভালো থাকার জন্য শরীরচর্চা বা ব্যায়ামের গুরুত্ব অপরিহার্য। তবে অনেক সময় দেখা যায়, একই ধরনের শরীরচর্চা করতে করতে একঘেয়েমি চলে আসে।
অথবা এমনও হতে পারে, শরীরচর্চা করতে গিয়ে আপনি সঠিক গাইডেন্স পাচ্ছেন না। ফলে কাঙ্ক্ষিত ফল লাভ করা তো দূরের কথা, অনেক সময় তা ক্ষতির কারণও হয়ে দাঁড়ায়। তাই, আপনার শরীরচর্চার ধরন পরিবর্তনের সময় এসেছে কিনা, তা বোঝার কিছু লক্ষণ নিয়ে আলোচনা করা হলো।
১. একঘেয়েমি:
যদি আপনার শরীরচর্চা করতে ভালো না লাগে, তাহলে বুঝতে হবে রুটিনে পরিবর্তনের প্রয়োজন। একই ধরনের ব্যায়াম করতে করতে একঘেয়ে লাগাটা স্বাভাবিক। শরীরচর্চায় বৈচিত্র্য আনা প্রয়োজন।
একই ধরনের ব্যায়াম করতে থাকলে আপনি আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন। তাই, দৌড়ানো, সাঁতার কাটা, যোগা, বা নাচের মতো অন্য কিছু চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
২. প্রশিক্ষকের চাপানো লক্ষ্য:
একজন প্রশিক্ষক অবশ্যই আপনাকে নতুন কিছু দক্ষতা অর্জন করতে সাহায্য করতে পারেন। তবে, যদি প্রশিক্ষক আপনার শারীরিক গঠন বা ওজন কমানোর মতো কোনো লক্ষ্য আপনার উপর চাপিয়ে দেন, তাহলে সেই বিষয়ে সতর্ক হওয়া উচিত।
কারণ, সবার শারীরিক গঠন এবং চাহিদা এক রকম নাও হতে পারে। আপনার ব্যক্তিগত লক্ষ্য, আপনার শরীরের ক্ষমতা এবং কেমন অনুভব করছেন, সেগুলোর প্রতিও খেয়াল রাখা দরকার।
৩. সঠিক নির্দেশনার অভাব:
একজন ভালো প্রশিক্ষক কেবল ব্যায়ামের পদ্ধতি বলেই ক্ষান্ত হন না, বরং প্রতিটি শিক্ষার্থীর প্রতি মনোযোগ দেন। ব্যায়ামের সময় তাদের সঠিক ভঙ্গি এবং ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়া জানান।
যদি দেখেন প্রশিক্ষক সেভাবে সহযোগিতা করছেন না, তাহলে বুঝতে হবে পরিবর্তনের সময় এসেছে।
৪. ওজন বা গতি বাড়ানোর জন্য চাপ:
যদি প্রশিক্ষক ব্যায়ামের সময় ওজন বাড়াতে বা দ্রুত গতিতে ব্যায়াম করতে বলেন, তাহলে সতর্ক থাকুন। নিজের শরীরের ক্ষমতা অনুযায়ী ব্যায়াম করা উচিত।
প্রশিক্ষক যদি আপনার শরীরের অবস্থা না জেনে শুধু ওজন বাড়ানোর কথা বলেন, তবে তা এড়িয়ে যাওয়া ভালো।
৫. অপ্রয়োজনীয় পরামর্শ:
যদি কোনো প্রশিক্ষক আপনার খাদ্যাভ্যাস বা জীবনযাত্রার বিষয়ে অযাচিত পরামর্শ দেন, তাহলে বুঝতে হবে তিনি তার সীমানা অতিক্রম করছেন। প্রশিক্ষকের এই ধরনের আচরণ পেশাদারিত্বের অভাব প্রমাণ করে।
৬. আঘাত বা অসুস্থতা বিবেচনা না করা:
আপনার যদি কোনো আঘাত থাকে বা আপনি যদি গর্ভবতী হন, তাহলে প্রশিক্ষকের সেই বিষয়ে অবগত থাকা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যায়াম পরিবর্তনে সহায়তা করা উচিত। যদি প্রশিক্ষক আপনার শারীরিক সীমাবদ্ধতা বিবেচনা না করেন, তবে সেখানে পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
৭. ঘন ঘন আঘাত পাওয়া:
যদি দেখেন, নিয়মিত শরীরচর্চা করার পরেও আপনি প্রায়ই আহত হচ্ছেন, তাহলে বুঝতে হবে আপনার ব্যায়ামের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা দরকার। পর্যাপ্ত বিশ্রাম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং মানসিক চাপ কমানোর দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
এছাড়া, ব্যায়ামের ভঙ্গি পরিবর্তনের জন্য একজন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিতে পারেন।
আপনার শরীরচর্চার রুটিন পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, এই বিষয়গুলো বিবেচনা করা জরুরি। নিজের শরীরের কথা শুনুন এবং এমন কিছু বেছে নিন যা আপনাকে আনন্দ দেয়।
মনে রাখবেন, সুস্থ থাকতে হলে শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে সমানভাবে মনোযোগ দিতে হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান