বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ: তালিকায় শীর্ষ কারা?

বিশ্বের সুখী দেশগুলোর তালিকা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক সুখ দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত এই তালিকায় টানা আট বছর ধরে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে ফিনল্যান্ড। তবে, তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক উন্নত দেশের পারফর্মেন্সে অবনতি হয়েছে।

**সুখ সূচকে ফিনল্যান্ড শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে**

প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান এবং সুখের ধারণা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সল্যুশনস নেটওয়ার্কের (UN Sustainable Development Solutions Network) তত্ত্বাবধানে প্রকাশিত ‘বিশ্ব সুখ প্রতিবেদন-২০২৫’ (World Happiness Report 2025)-এ এই তথ্য উঠে এসেছে। এবারের প্রতিবেদনে শীর্ষস্থানে রয়েছে ফিনল্যান্ড। দেশটি টানা আট বছর ধরে এই স্থানটি ধরে রেখেছে।

প্রতিবেদনে মানুষের সুখের ধারণা নির্ধারণের জন্য মাথাপিছু জিডিপি, সামাজিক সহযোগিতা, স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার প্রত্যাশা, স্বাধীনতা, উদারতা এবং দুর্নীতির ধারণা- এই বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

**যুক্তরাষ্ট্রের অবনতি, শীর্ষ ২০-এর বাইরে**

এবারের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের স্থান হয়েছে ২৪তম। গত বছরের তুলনায় তাদের অবস্থানে বেশ অবনতি হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে জীবন সম্পর্কে খারাপ ধারণা তৈরি হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের র‍্যাঙ্কিংয়ে এই পরিবর্তন এসেছে। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বন্ধু এবং পরিবারের কাছ থেকে কম সমর্থন পাওয়া, জীবনযাত্রার স্বাধীনতা কমে যাওয়া এবং জীবনযাত্রার মান সম্পর্কে কম আশাবাদী হওয়ার মতো বিষয়গুলো তাদের অসুখী করে তুলেছে।

শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, যুক্তরাজ্যও তাদের সুখের সূচকে পিছিয়ে রয়েছে। দেশটি ২৩তম স্থানে নেমে এসেছে। এছাড়াও, কানাডার অবস্থানও আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে।

**অন্যান্য দেশের অবস্থান**

ফিনল্যান্ডের পরেই সুখী দেশের তালিকায় রয়েছে ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড এবং সুইডেন। শীর্ষ ১০ সুখী দেশের তালিকায় আরও আছে নেদারল্যান্ডস, কোস্টারিকা, নরওয়ে, ইসরায়েল, লুক্সেমবার্গ এবং মেক্সিকো।

অন্যদিকে, আফগানিস্তানকে বিশ্বের সবচেয়ে অসুখী দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তালিকায় একেবারে শেষের দিকে রয়েছে সিয়েরা লিওন, লেবানন, মালাউই এবং জিম্বাবুয়ে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উন্নত দেশগুলোতে মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং সামাজিক আস্থার অভাব দেখা যাচ্ছে, যা রাজনৈতিক মেরুকরণ এবং বিদ্যমান ব্যবস্থার প্রতি অসন্তোষের কারণ।

**সুখের মূল চাবিকাঠি: পারস্পরিক সহানুভূতি**

প্রতিবেদনে সুখী হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। মানুষের প্রতি সহানুভূতি এবং অন্যের প্রতি ভালো ধারণা পোষণ করা সুখী হওয়ার অন্যতম চাবিকাঠি। মানুষ যদি তার চারপাশের মানুষ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা রাখে, তাহলে তাদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আসতে পারে। এর ফলে, সমাজে সহযোগিতা বাড়বে এবং নেতিবাচকতা কমবে, যা সুখের অনুভূতি বাড়াতে সহায়ক হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *