বিশ্বের বিভিন্ন শেয়ার বাজারে বৃহস্পতিবার মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজার সামান্য ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও, প্রযুক্তি খাতের কোম্পানি এনভিডিয়ার আয় বিষয়ক প্রতিবেদনের দিকে বিনিয়োগকারীদের বিশেষ নজর ছিল।
এই পরিস্থিতিতে, চীনের সাংহাই শেয়ার বাজারে তেজিভাব দেখা গেলেও হংকংয়ের বাজারে দরপতন হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতির গতিপ্রকৃতির ওপর এই বাজারের ওঠা-নামা প্রভাব ফেলতে পারে।
এনভিডিয়া হলো একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, যারা মূলত কম্পিউটার চিপ তৈরি করে। তাদের আয় বিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশের আগে বিনিয়োগকারীরা বেশ সতর্ক ছিলেন।
কারণ, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির প্রসারের সঙ্গে এই কোম্পানির ব্যবসা সরাসরি জড়িত। বাজারের ধারণা ছিল, এনভিডিয়ার বিক্রি বাড়বে, কিন্তু প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, প্রত্যাশা অনুযায়ী তাদের চিপ বিক্রির হার বাড়েনি। ফলে, শেয়ার বাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
চীনের শেয়ার বাজারের দিকে তাকালে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। সাংহাই কম্পোজিট ইনডেক্স ১.১ শতাংশ বেড়ে ৩৮৪৩.৬০ পয়েন্টে পৌঁছেছে।
এই বাজারের ঊর্ধ্বগতির পেছনে প্রধান কারণ ছিল বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনা। এছাড়া, চীনের সরকার সেমিকন্ডাক্টর বা অর্ধপরিবাহী প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করছে, যার ফলে দেশটির কম্পিউটার চিপ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ক্যামব্রিকন টেকনোলজিসের শেয়ারের দাম ১৫.৭ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে, হংকংয়ের বাজার প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দর পতনের কারণে ০.৮ শতাংশ কমেছে।
খাদ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেইতুয়ানের শেয়ারের দাম ১১.৫ শতাংশ এবং ই-কমার্স জায়ান্ট জেডি ডটকমের শেয়ারের দাম ৪ শতাংশ কমেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের বাজারে ভোক্তাদের ব্যয় কমানোর প্রবণতার কারণে এই দরপতন হয়েছে।
জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ০.৭ শতাংশ বেড়ে ৪২,৮২৮.৭৯ পয়েন্টে উঠেছে। তবে, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় সেখানকার বাজারে কিছুটা অস্থিরতা রয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি সূচক ০.৩ শতাংশ এবং অস্ট্রেলিয়ার এস&পি/এএসএক্স ২০০ সূচক ০.২ শতাংশ বেড়েছে। ভারতের শেয়ার বাজারও ০.৭ শতাংশ কমেছে।
অপরিশোধিত তেলের বাজারেও দরপতন হয়েছে। বৃহস্পতিবার, প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৬৩.৬৭ ডলারে।
আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ছিল ৬৬.৯৭ ডলার।
ডলারের বিপরীতে জাপানি ইয়েনের দর কমেছে, যেখানে ইউরোর সামান্য উত্থান হয়েছে।
এসব বাজারের ওঠা-নামা বাংলাদেশের জন্য সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে। বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থির পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সতর্ক থাকতে হবে এবং বাজারের পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে হবে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস