বিশ্ব শেয়ার বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে, যেখানে মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। বুধবার প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.৭ শতাংশে, যা আগের মাসের তুলনায় বেশি।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে অন্যতম কারণ হতে পারে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন দেশের ওপর আরোপিত শুল্ক। খবর অনুযায়ী, পোশাক ও খেলনার মতো আমদানি করা পণ্যের দাম বাড়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
ইউরোপের শেয়ার বাজারগুলোতেও এর প্রভাব পড়েছে। জার্মানির ড্যাক সূচক সামান্য ০.১ শতাংশ বেড়েছে, প্যারিসের সিএসি ৪০ সূচক কমেছে ০.১ শতাংশ, এবং ব্রিটেনের এফটিএসই১০০ সূচক ০.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এশিয়ার বাজারগুলোতেও মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে। জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক সামান্য হ্রাস পেয়েছে, হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ০.৩ শতাংশ এবং সাংহাই কম্পোজিট সূচক সামান্য কমেছে।
তবে তাইওয়ানের তাইএক্স সূচক বেড়েছে ০.৯ শতাংশ এবং ভারতের সেনসেক্স সূচক ০.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে, ইন্দোনেশিয়ার শেয়ার বাজারে দেখা গেছে ঊর্ধ্বগতি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১৯ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনার কথা জানালেও, দেশটির বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
একইসঙ্গে, ইন্দোনেশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার ০.২৫ শতাংশ কমিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, এস&পি ৫০০ সূচক ০.৪ শতাংশ কমেছে এবং ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ ১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তবে প্রযুক্তি কোম্পানি এনভিডিয়ার শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে নাসডাক কম্পোজিট সূচক ০.২ শতাংশ বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থিরতা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বিশ্ব বাজারের এই পরিবর্তনের ফলে দেশের আমদানি-রপ্তানি এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে প্রভাব পড়তে পারে।
বিশেষ করে, মার্কিন শুল্কনীতির কারণে তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়লে, তা বাংলাদেশের বাণিজ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এছাড়াও, বিশ্ববাজারে সুদের হার বাড়লে, বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামেও কিছুটা পতন দেখা গেছে। বুধবার, মার্কিন বেঞ্চমার্ক অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৬৬.৩১ ডলারে নেমে আসে, যেখানে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ছিল ৬৮.৪০ ডলার।
ডলারের বিপরীতে জাপানি ইয়েনের দর সামান্য কমে ১৪৮.৭৯-এ দাঁড়িয়েছে, এবং ইউরোর দর ১.১৬৩০ ডলারে পৌঁছেছে। বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনের দিকে গভীর নজর রাখা প্রয়োজন, যাতে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা যায়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস