শিরোনাম: বিশ্বের বৃহত্তম বৈদ্যুতিক জাহাজ: টেকসই জলপথের দিকে এক ধাপ
অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়ার একটি জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি বিশ্বের বৃহত্তম ব্যাটারি-চালিত জাহাজ তৈরি করেছে। ‘ইনক্যাট’ নামক এই কোম্পানিটি ১৩০ মিটার দীর্ঘ ‘হাল ০96’ নামের এই জাহাজটি তৈরি করেছে।
এটিকে টেকসই নৌপরিবহনের দিকে এক বিরাট পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। শুক্রবার, হোবার্টে এই জাহাজটি উন্মোচন করা হয়। এটি আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেস থেকে উরুগুয়ে পর্যন্ত যাত্রী এবং যানবাহন পরিবহনের জন্য তৈরি করা হয়েছে।
ইনক্যাটের চেয়ারম্যান রবার্ট ক্লifford বলেছেন, “আমরা চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তাসমানিয়ায় বিশ্বমানের জাহাজ তৈরি করছি, এবং ‘হাল ০96’ আমাদের তৈরি করা সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী, জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প।” তিনি আরও জানান, তারা বিশ্ব বাজারে পরিবেশবান্ধব জাহাজ তৈরি করতে চায়।
এই জাহাজে ২৫০ টনের বেশি ব্যাটারি রয়েছে এবং এর ক্ষমতা ৪০ মেগাওয়াট-আওয়ার। ইনক্যাটের প্রধান নির্বাহী স্টিফেন কিসি বলেছেন, “হাল ০96 প্রমাণ করে যে বৃহৎ আকারের, কম-নিঃসরণকারী পরিবহন সমাধান এখন সম্ভব।”
এই অত্যাধুনিক জাহাজটিতে একসঙ্গে ২,১০০ জন যাত্রী এবং ২২৫টি গাড়ি বহন করার ব্যবস্থা রয়েছে। এটি আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ের মধ্যে প্রবাহিত রিও দে লা প্লাটা নদী পথে চলাচল করবে।
উল্লেখযোগ্য, রিও দে লা প্লাটা নদীটি অনেকটা বাংলাদেশের পদ্মা নদীর মতো, যা দুটি দেশের মধ্যে জলসীমা তৈরি করেছে।
জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী শিপিং শিল্প বছরে বিশ্বের মোট কার্বন নিঃসরণের ৩% এর জন্য দায়ী। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য এই ধরনের প্রযুক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ, এটি কার্বন নিঃসরণ কমাতে সাহায্য করতে পারে এবং পরিবেশবান্ধব জলপথ তৈরি করতে সহায়ক হবে। ভবিষ্যতে, এই ধরনের প্রযুক্তি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন খাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
আরএমআইটি ইউনিভার্সিটির টেকসই উন্নয়ন ও নগর পরিকল্পনা বিভাগের প্রভাষক ড. লিয়াম ডেভিস বলেছেন, নতুন এই জাহাজটি একটি নিয়মিত ফেরি রুটে চলাচল করবে বলে, এটি নৌপরিবহন বিদ্যুতায়নের ক্ষেত্রে একটি ভালো দৃষ্টান্ত হতে পারে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে, বৈদ্যুতিক শিপিং কিভাবে কার্যকর করা যায়, তা পর্যায়ক্রমে পর্যবেক্ষণ করা হবে। এর থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা কন্টেইনার জাহাজ এবং কার্গো জাহাজ তৈরিতে সহায়ক হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান